সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু আজ

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন দিন সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে বলে জানিয়েছেন আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
পিপি ফরিদুল আলম বলেন, এই সময় মামলার এক থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেবেন। মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসকে দিয়েই শুরু হবে বিচার কার্যক্রম। তিনি বলেন, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মামলার ১৫ জন আসামিকেও আদালতে হাজির করা হবে। আসামিরা সবাই এখন কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন। মামলায় মোট সাক্ষী ৮৩ জন। পিপি ফরিদুল আলম আরও বলেন, গত ২৬ জুলাই থেকে পরবর্তী তিনদিন সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণরোধে কঠোর বিধিনিষেধ চলায় তা সম্ভব হয়নি। পরে ২৩, ২৪ ও ২৫ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আদালতে হাজির থাকতে ১৫ জন সাক্ষীকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সাক্ষীরা হলেন- শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস, সিনহার সঙ্গী সহিদুল ইসলাম সিফাত, টেকনাফের মিনাবাজার এলাকার মোহাম্মদ আলী, শামলাপুর এলাকার মো. আবদুল হামিদ, মো. ইউনুছ, ফিরোজ মাহমুদ, মহিবুল্লাহ, মো. আমিন, মো. কামাল হোসেন ও মো. শওকত আলী, রামু সেনানিবাসের সার্জেন্ট মো. আয়ুব আলী, সিনহার সঙ্গী শিপ্রা দেবনাথ, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দুই চিকিৎসক শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী ও রনধীর দেবনাথ এবং টেকনাফের বাহারছড়ার মারিষবুনিয়া গ্রামের হাফেজ জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব-১৫।
হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রূল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামী কারাগারে রয়েছে। এরমধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলায় বর্তমানে কারাগারে থাকা ১৫ আসামি হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, বরখাস্ত এপিবিএনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত