গোপালগঞ্জে বিদ্যালয় খুলতে প্রস্তুত কর্তৃপক্ষ, চলছে পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ
বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেয়া হবে স্কুল এমন ঘোষনার পর সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গোপালগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা কায্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুতি নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শ্রেণীকক্ষ, অফিসক্ষসহ বিদ্যালয় চত্ত্বরে চলছে পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ। ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে শ্রেণিকক্ষ, ব্ল্যাকবোর্ড। চলছে বেঞ্চ সাজিয়ে রাখার কাজ।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও নেয়া হয়েছে প্রস্তুতি। দীর্ঘ দিন পর বিদ্যালয় খুলে দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের পর থেকে প্রায় দেড়’ বছর বন্ধ রয়েছে সারা দেশের মত গোপালগঞ্জ জেলার ১২’শ এর বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় এসব বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষের বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল, ব্লাকবোর্ড, অফিস রুম ও খেলার মাঠসহ বিভিন্ন জায়গায় জমেছে ধুলাবালি ও আবর্জনার স্তুপ।’
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সকল স্কুল কলেজ খোলার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে জেলার ৮৬২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০৩টি মাধ্যমিক ও ৮৯টি মাদ্রাসা ও শতাধিক কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে শুরু হয়েছে পরিস্কার পরিছন্নতার কাজ। শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা ও অক্সিজেন লেভেল পরীক্ষা এবং সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হবে শ্রেণীকক্ষে। এছাড়া হঠাৎ কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে চিকিৎসা কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জোর দেয়া হচ্ছে মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও হাত ধোয়ার ওপর। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সাবান ও পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টাও চলছে স্কুলগুলোতে।
অনেকটা উৎসবের আমেজে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় খুঁশি শিক্ষার্থীরা। আগের মতোই স্কুলে এসে সরসরি ক্লাস করে লেখাপড়ার যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুল কবীর রাতুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের স্কুলণ বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে ক্লাস করলেও তা আমাদের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। এখন ক্লাশ শুরু হলে পড়ালেখার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুশিয়ে নিতে পারবো। পঞ্চম শ্রেণী, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মতো আমাদেরও সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাসের দাবী জানাই।
শহরের স্বর্ণকলি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফেরদৌস কবির রাদিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের স্কুল বন্ধ রয়েছে। সামনে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। স্কুলে ক্লাশ করতে পারলে সেই ক্ষতি আমরা কাটিয়ে উঠে প্রস্তুতি নেতে পারবো।
শেখ হাসিনা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক হুমায়ারা খানম বলেন, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল ও কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী আমরা শ্রেণীকক্ষ, অফিস, ব্লাকবোর্ড, বেঞ্চ ও খেলার মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছি। আশা করি দ্রুত সব কাজ শেষ করে ক্লাশ চারুর উপযোগী করে গেড়ে তোলা হবে।
বিণাপণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সনেকা বিশ্বাস বলেন, শ্রেণিকক্ষে ঢোকার আগে শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা ও অক্সিজেন লেভেল পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া সাবান পানি দিয়েও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক চিকিসা দেয়ার জন্য আলাদা কক্ষও প্রস্তুন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত