আনন্দ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে স্কুল ও কলেজে একযোগে ক্লাশ শুরু

| আপডেট :  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪৮  | প্রকাশিত :  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৪:৪৮

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: কারোনাকালীন সময়ের দেড় বছর পর ব্যাপক আনন্দ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে স্কুল ও কলেজে একযোগে শুরু হয়েছে ক্লাশ। স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পদচারণায় আবারো হয়ে উঠেছে মুখোরিত। এসময় শিক্ষার্থীদের চকলেট দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ঘোষনা অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণী, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন ও অন্যাণ্য শ্রেণীর একদিন করে ক্লাস হবে। দীর্ঘ দিন পর বিদ্যালয় খুলে দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের বেশ কয়েকটি স্কুল গিয়ে দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের পর থেকে সারা দেশের মত দেড়’ বছর বন্ধ ছিল গোপালগঞ্জ জেলার ১২’শ এর বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১২ সেপেপ্টম্বর জেলার ৮৬২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০৩টি মাধ্যমিক, ৮৯টি মাদ্রাসা ও শতাধিক কিন্ডারগার্ডেন স্কুল এবং কলেজে শুরু হয়েছে ক্লাস। আগের দিনে বিভিন্ন স্কুলে রঙ্গীন কাগজ ও ফুল দিয়ে বিদ্যালয় ও ক্লাশ রুম সাজানো হয়।

আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই ক্লাসে যোগ দিতে স্কুল ও কলেজ গেটে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। স্কুলে প্রবেশের আগে শিক্ষার্থীদের শারীরের তাপমাত্র মেপে ও সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে এবং স্যানিটাইজ করে বিদ্যালয় ও কলেজে প্রবেশ করতে দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এসময় মিক্সার্থদের চকলেট দিয়ে বরণ করা হয়। অনেক দিন পর বন্ধুদের দেখা পেয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়ে তারা।

পরে সামাজিক দূরত্ব বজার রেখে একই বেঞ্চে বসানো হয় দুইজন করে শিক্ষার্থী। এরপর চির চেনা রূপে শুরু হয় ক্লাশ। শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষাদান শুরু করেন।

দীর্ঘদিন পর ক্লাশ করতে পেরে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। এতে করে দেশ বছরে পড়াশোনায় যে ঘটতি থেকেছে তা কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়া স্কুল খুলে ক্লাশ শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আবারো নিয়ম-শৃংখলার মধ্যে থেকে পড়াশোনা করতে পাবরে। সেই সাথে উৎসাহ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করাতে পরে খুশি শিক্ষকরা।

বীণাপানি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্তী সাদিয়া আলমগীর মেঘলা বলেন, আবারো স্থুলে আসতে পরে শুধু আমি না সবাই আনন্দিত। আবার স্কুলে আসতে পারবো ভাবতে পারিনি। বিছু দিনের মধ্রে মাধ্যমিক জীবন শেষ করে কলেজে উঠবো এটা ভাবতেই খুব আনন্দ লাগে।

একই স্কুলের ১গম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ওশান বিশ্বাস বলেন, দেড় বছর পর আমরা আবার স্কুলে আসতে পেড়েছি। আবারো শিক্ষক ও বান্ধবীদের সাথে দেখা হলো। সেই সাথে পডাশোনাও মনোযোগ দিতে পারবো। স্কুলে ক্লাশ করতে পাড়ায় খুব আনন্দ লাগছে।

স্বর্ণকলি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফেরদৌস কবির রাদিন বলেন, দীর্ঘ করোনাকালিত ছুটির পর আবারও আমার ক্লাশে যোগ দিতে পেরেছি। আমরা সবাই আনন্দিত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়েই আমরা আগামীদিনে ক্লাশ করতে পারবো।

শহরের পাচুঁড়িয়া এলাকার সৈয়দ আকবর হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মেয়ের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটেছিল। আবারো স্কুল খুলে দেয়ায় বাচ্চারা স্কুল গিয়ে পড়ালেখা করতে পারছে এতে আমি খুঁশি। ক্লাস করতে পারায় পড়ালেখায় যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে পারবে।

একই এলাকার একরামুল কবীর বলেন, দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় আমার দুই ছেলে পড়ালোখায় মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। তবে স্কুলে খোলায় বাচ্চারা আবারো মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে পারবে। এতে আগামী দিনের প্রস্তুতি নিতে পারবে।

গোপালগঞ্জ এস এম মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার বলেন, করোনাকালীন সময়ে দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকায় শিক।সার্থীদের পড়ালেখায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা খুব কাছ থেকে পাঠদানে অভ্যস্থ ছিল। অনলাইনে ক্লাশে তারা অভ্যস্থ ছিল না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু পুথিগত শিক্ষা অর্জনের জন্য নয়, এখানে শিশুরা অনেক কিছিই শিখে থাকে। শিষ্ঠাচার শেখে, বন্ধুত্ব শিখে, মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে শিখে, নিজেদের মূল্যবোধের মাধ্যমে গড়ে তেলা শেখে। এতদিন বিদ্যালয়, মাঠ ও শ্রেণীক্ষ কোলাহলমুক্ত ছিল। আজ থেকে বিদ্যালয় কোলাহলে পূর্ণ হয়ে যাবে এটা ভাবতেই খুব ভাল লাগছে।

গোপালগঞ্জ বীণাপানি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃন্ময় বাড়ৈ বলেন, আজকের দিনটি আমাদের ও শিক্ষার্থীদের জন্য সুখকর। এতদিন ক্লাশ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাশাপশি আমাদেরও খারাপ লেগেছিল। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই স্কুলগুলো খলে দেয়ার জন্য। সেই সাথে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আর যাতে স্খুলগুলো বন্ধ করে দেয়া না লাগে। এজন শিক্সার্তীর জন্য স্কুল হল নিরাপদ জায়গা। আমরা শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করার দাবী জানাই।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত