১৫ বছরে ধরে বেহাল দশা ব্রিজ পার হতে লাগে সাঁকো, ভোগান্তিতে পথচারীদের

| আপডেট :  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:১২  | প্রকাশিত :  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১:১২

ইমরান হোসেন,পটুয়াখালী থেকে: নদী পার হতে লাগে ব্রিজ। আশ্চর্যের বিষয় হল ব্রিজ পার হতেও দরকার হচ্ছে সাঁকোর। এমনই এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামে। গত ১৫ বছর ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে একটি আয়রন ব্রিজ। ব্রিজের পাকা স্লাব গুলো ভেঙে গেছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় স্থানীয়রা গাছের গুঁড়ি দিয়ে সাঁকো বানিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীসহ সহস্রাধিক মানুষ। ব্রিজ নির্মাণের জন্য কর্তা ব্যক্তিরা একাধিকবার পরির্দশন করলেও ব্রিজ নির্মাণ আর হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজ নয়, একটি ব্রিজের অবয়ব দাঁড়িয়ে রয়েছে। ব্রিজের সব স্লাব গুলো ভেঙে গেছে। নেই লোহার হাতল শুধু কয়েকটি খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে।

এলাকাবাসী ব্রিজের খুঁটির উপর গাছের গুঁড়ি এবং বাঁশ দিয়ে সাঁকো বানিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হয়েছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ,বৃদ্ধ-শিশুরা। তাই স্থানীয়রা এ ব্রিজটির নাম দিয়েছে “কালের পোল”।

স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে গত ৩০দিনে প্রায় ১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।এতে আহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন মোসা. রুশিয়া বেগম (৫০), মোসা. হাসিনা বেগম (২৬) ও তাঁর আড়াই বছরের সন্তান নোমান, মোসা. সিমা বেগম (৪০),মাদরাসা ছাত্র মো.সোহেল (১৬)।

স্থানীয় বাসিন্দা মো.আমিনুল ইসলাম বলেন “আমার আব্বা এ ব্রিজ থেকে পড়ে গিয়ে গুরতর আহত হয়”। স্থানীয়রা না থাকলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত না।

রুশিয়া বেগম বলেন, ব্রিজ থেকে পড়ে আমার হাত ভেঙে গেছে। হাত ঠিক করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. ফিরোজ গাজী বলেন, একটি খালের কারনে চরওয়াডেল গ্রাম দুই ভাগে বিভক্ত। যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম এ ব্রিজটি। তবে ব্রিজটির অবস্থা বেহাল হওয়ায় দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেকের হাত ভেঙে গেছে। কারো দাঁত পরে গেছে। কেউ কেউ গুরতর আহত হয়ে বিছানায় পড়ে রয়েছেন।

কলেজ শিক্ষার্থী মো. গাজী মনির বলেন, নদী বেষ্টিত ইউনিয়ন চন্দ্রদ্বীপ। উপজেলার অন্যসব ইউয়িনের তুলনায় এখানে তেমন উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ব্রিজটির বেহাল দশা থেকে আমরা মুক্তি চাই। ব্রিজটি নির্মাণ করা আমাদের প্রাণের দাবি।

এবিষয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বার আবেদন করেছি। তারা কয়েক বার পরির্দশনও করেছেন। কিন্তু অদৃশ্য কারনে ব্রিজটির নির্মাণ হচ্ছে না।

এবিষয়ে বাউফল উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারি প্রকৌশলী আলী ইবনে আব্বাস বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্রিজটি পরির্দশন করেছেন। সয়েল টেস্টও হয়েছে। দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত