‘বিএনপি নির্বাচনে এলো কি না সেটা কোনো বিষয় না’

| আপডেট :  ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৩৭  | প্রকাশিত :  ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৩৭

সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সেটা তাদের ব্যাপার। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন যথা সময়েই অনুষ্ঠিত হবে। সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। নির্বাচনও কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। বিএনপি নির্বাচনে এলো কি এলো না, তা দেখার বিষয় না।

আজ বুধবার জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন বড় গলায় কথা বলছেন। এই নির্বাচনে অংশ নেব না, সংলাপেও যাব না। আপনাদের কে ডেকেছে সংলাপে? শেখ হাসিনা গতবার সংলাপ ডেকেছিল সেটার আপনারা কি জবাবটা দিয়েছেন? সেই সংলাপের পর আপনাদের ভূমিকা কি ছিল? আপনাদেরকে কেউ সংলাপে ডাকছে না। নিজেরাই আগ বাড়িয়ে সংলাপের কথা বললেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম,সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব আপনাকে পরিষ্কার বলে দিতে চাই, যতই হাঁকডাক করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশে জাদুঘরে চলে গেছে। জাদুঘর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবে বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি চলছে। তিনি দেশের বাইরে আছে। মুচলেকা দিয়েছিল আর রাজনীতি করবেন না। শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছেন, সাহস থাকলে মাঠে আসেন, মাঠে এসে রাজনীতি করেন। আন্দোলনে, নির্বাচনে তাদের নেতা কে?

জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনর্বাসিত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি মুক্তিযোদ্ধার দল নয়, মুখোশধারি মুক্তিযোদ্ধার দল। এটা গণতান্ত্রিক দল নয়, বর্ণচোরা গণতান্ত্রিক দল। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। এখন দেশের এক নম্বর শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। আর এই সম্প্রদায়িকতার চারা জিয়াউর রহমান রোপণ করেছিল। সেই বিষ বৃক্ষ এখন ডালপালা ছড়াচ্ছে।

আমাদেরকে অভিভাবক শুন্য করতে বঙ্গবন্ধুকে আর নেতৃত্ব শুন্য করতে জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার ভিতরে হত্যা করা হয়েছিল জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কারা এই হত্যাকাণ্ড সংঠিত করেছিল। আপনারা এই দায় এড়াতে চান, সুষ্পষ্ট প্রমাণ আছে। খুনীদের রক্ষা করতে কে তাদের বিদেশে পাঠিয়েছিল, পুরস্কৃত করেছিল। খুনীদের পুরস্কৃত, পুনর্বাসন করেছিল সেনাপতি জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না এই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের আর জাতীয় চার নেতাদের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের মাস্টার মাইন্ড জিয়াউর রহমান জানিয়ে তিনি বলেন, খুনীদের মতই একই অপরাধে তিনি অপরাধী। তিনি যদি হত্যাকারী নাই হবেন তাহলে এই হত্যার বিচার হবে না-এই আইনকে কেন বৈধতা দিলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হত্যা করতেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। আর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল আমাদের শেষ পেরাগ মারার অশুভ লক্ষ্যকে সামনে রেখে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করতে তাদের হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছিল হত্যা ক্যুর মধ্য দিয়ে। আজকে তারা (বিএনপি) বলছে, আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না এমনকি আলোচনায়ও যাবে না। আসলে তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। তারা বিশ্বাস করে হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে। এজন্য মির্জা ফখরুলসহ তাদের প্রথম সারির নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলেন। আলোচনায় না যাওয়ার কথা বলেন। তবে অতীতে যেমন কারো জন্য নির্বাচন থেমে থাকেনি। ভবিষ্যতেও কারো জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত