অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকাকে মেরে করে ভাসিয়ে দেওয়া হয় মেঘনায়
বিয়ের পর পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন নিপা আক্তার। বিষয়টি জেনে যাওয়ার পর সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়ি রেখে আসেন স্বামী। এর মধ্যে পেটে আসে প্রেমিক আমিনুল ইসলামের সন্তান। তাই বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন নিপা। পরে নৌকায় করে মেঘনা নদীতে নিয়ে বিয়ে করার কথা বলে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন প্রেমিক। লাশ ফেলে দেন নদীতেই। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে নরসিংদীতে। হত্যাকাণ্ডে আমিনুলের সহযোগী সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তারের পরই এ তথ্য জানতে পারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধারে ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পিবিআই বের করে আনে মূল কাহিনি। এ বিষয়ে জানাতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডি পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে তদন্তের সব কিছু তুলে ধরেন নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (পিবিআই) এনায়েত হোসেন মান্নান। তিনি জানান, আমিরুল ইসলামের সঙ্গে নিপার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমিরুলের বাবা তাদের সম্পর্ক মেনে নেননি, বরং মেয়েটিকে অন্যত্র বিয়ে দিতে সহায়তা করেন। নিপা এক বছর সংসার করার পর সেখানে তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। আমিনুল একপর্যায়ে নিপার স্বামীকে তাদের অতীত প্রেমের কথা বলে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নিপাকে সন্তানসহ বাবার বাড়িতে রেখে আসেন স্বামী। এর পর আমিরুলের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে নিপা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন প্রেমিককে। কিন্তু কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি নন আমিরুল। উল্টো সহযোগীদের নিয়ে নিপাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী, গত বছরের ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার পর নিপাকে বিয়ের কথা বলে নৌকাযোগে মেঘনা নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝ নদীতে নিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ ও এলোপাথাড়ি পিটিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন আমিরুল।
পিবিআইয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, নিপাকে হত্যার পর চরের কোথাও চাপা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু নদীর সব দিকে জেলেদের উপস্থিতি থাকায় উপায় না দেখে লাশটি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। হত্যায় ব্যবহৃত গামছা ও সঙ্গে থাকা কোদালটি নদীতে ফেলে দেন আমিরুলরা। পরে ঘটনাস্থলের ৪০ কিলোমিটার দূরে অজ্ঞাত হিসেবে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুলের সহায়তায় সেটিকে দাফন করা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দেখে নিপাকে শনাক্ত করে তার পরিবার। আমিরুল বর্তমানে পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত