সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয় বাংলাদেশে
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত চিকিৎসা খরচ বাংলাদেশে। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণায় উঠে এসেছে, চিকিৎসায় রোগীকে নিজ পকেট থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৬৮ দশমিক ৫০ ভাগ টাকা, যার বড় অংশই খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতে। বাড়তি এই খরচের কারণে চিকিৎসা নিতে পারে না ১৬ ভাগ রোগী।
গত ১০ বছরে স্বাস্থ্য খাতে অনেক উন্নতি হলেও সংকট এখনো প্রকট। সরকারি হাসপাতালে সেবার ঘাটতি ও বেসরকারি হাসাপাতালকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় রোগী চিকিৎসায় শৃঙ্খলা আসেনি। যে কারণে বাড়ছে ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয়।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, ২০১২ সালে চিকিৎসা বাবদ রোগীর নিজ পকেট থেকে ব্যয় ছিল ৬৪ ভাগ। ২০৩২ সালে এই খরচ ৩২ ভাগে নামিয়ে আনতে কৌশলপত্র নেয়া হলেও তা দিনে দিনে বাড়ছেই। একজন রোগীকে নিজ পকেট থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে ৬৮ দশমিক ৫০ ভাগ অর্থ। এই হার ভারতে ৬৩, পাকিস্তানে ৫৬, নেপাল ও শ্রীলংকায় ৫১, মালদ্বীপে ২১ ও ভুটানে ১৩ ভাগ।
গবেষণায় পাওয়া গেছে, বাংলাদেশে রোগীকে সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করতে হয় ওষুধ খাতে ৬৪ ভাগ। এরপর হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে ২৩ ভাগ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যয় হয় ৮ ভাগ টাকা। বাড়তি খরচের কারণে ১৬ ভাগ রোগী প্রয়োজন থাকলেও চিকিৎসা নিতে পারে না। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দরিদ্র হয়ে যায় ৮৬ লাখ মানুষ।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক ড. নুরুল আমিন বলেন, চিকিৎসার এই ব্যয় মেটাতে গিয়ে একটা মধ্যবিত্ত পরিবার দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। আর যারা দরিদ্র ছিলো তারা অতি দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে শুধু নিজ পকেট থেকে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, মাত্র তিন ভাগ মানুষ সরকারি হাসপাতাল থেকে ওষুধ পায়। সুবিধা না থাকায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ৮৫ ভাগই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে করতে হয়।
এবিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, “যারা ডাক্তার আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, সরকারি-বেসরকারি সকল জায়গায় তারা যেন রোগীদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা না দেন। আর প্রাইভেট সেক্টরের সাথেও আমরা কথা বলেছি তারা যেন এই সব পরীক্ষার ব্যয় টা একটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসেন যাতে করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি একটু হলেও কমে।”
রোগীর ব্যক্তিগত খরচ কমাতে তৃণমূলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত