যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান-সচিব ওএসডি

| আপডেট :  ২৩ নভেম্বর ২০২১, ০৯:১০  | প্রকাশিত :  ২৩ নভেম্বর ২০২১, ০৯:১০

জালিয়াতির মাধ্যমে ৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমীর হোসেন ও সচিব অধ্যাপক এ এম এইচ আলী আর রেজাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই দুই কর্মকর্তাকে যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রেষণে প্রত্যাহার করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে সংযুক্ত করা হয়েছে।

একই সময়ে অপর এক আদেশে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আহসান হাবীবকে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং রাজশাহী শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল খালেক সরকারকে সচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

এদিকে ৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় দায়ের করা দুর্নীতির মামলার তদন্ত কর্মাকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।

গত ৭ অক্টোবর যশোর শিক্ষা বোর্ডে প্রথম জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। এরপর একে একে বেরিয়ে আসে বোর্ড থেকে ৩৬টি চেকের মাধ্যমে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ১৮ অক্টোবর দুদকের সমন্বিত যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল এ বিষয়ে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন।

আসামিরা হলেন- যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সাবেক সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, প্রতারক প্রতিষ্ঠান ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু ও শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও বোর্ডের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির প্রধান কেএম রব্বানি বলেন, আমরা জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছি। ইতোমধ্যে শিক্ষা বোর্ডের সচিবের কাছে ৫৮ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। ৩৬টি চেকের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৭ কোটি টাকা। এই জালিয়াতির সঙ্গে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত রয়েছেন। তাদের সহযোগিতায় টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু জানান, বোর্ডের চেয়ারম্যান অপসারণ হওয়ায় এখন তার দুর্নীতি নিয়ে কর্মচারীরা মুখ খুলবেন। এতদিন তিনি চেয়ারে থাকায় কেউ তথ্য দিতে চাননি।

দুদকের যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, বোর্ডের দুর্নীতির মামলাটির তদন্তভার আমার ওপর দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। আত্মসাৎ করা টাকার শেষ গন্তব্যস্থল আমরা খুঁজে বের করব। এর সঙ্গে যেই জড়িত হোক না কেন রেহাই পাবে না।

প্রসঙ্গত, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নানা অপকর্মের কথা উল্লেখ করে তাকে অপসারণে চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর যশোর-২ আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন ও যশোর-৬ আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দেন। শিক্ষা বোর্ডের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে স্মারকলিপি দেয় বাম জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত