জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। আজ রবিবার (২৩ মে) সকালে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ ভার্চুয়াল আদালতে জামিন আবেদনের ওপর দুই পক্ষের শুনানি শোনার পর আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। পরে জানানো হয়, রবিবার আদেশ দেওয়া হবে।
ওইদিন আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা জামিন চান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালতের সামনে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করেন। ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি। আদালতের বাইরে রোজিনার স্বামী ও স্বজনরা অপেক্ষায় ছিলেন।
শুনানি শেষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো মানুষ আইনের ঊর্ধ্বে নই। আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে সেটা জামিন অযোগ্য। আর তাঁকে জামিন দিলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। এ ছাড়া আসামির কাছ থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ জন্য তাঁকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না।’
রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এজাহারে সে রকম কোনো আলামতের বর্ণনা নেই। যে আলামতের কথা বলা হচ্ছে, তা পরে ম্যানিপুলেট করা। তাই এ মামলায় জামিন পাওয়াটা আসামির প্রতি কোনো দয়া বা অনুগ্রহ নয়; বরং জামিন পাওয়াটা তাঁর মৌলিক অধিকার।’
গত ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর নথিপত্র চুরি ও ছবি তুলে নেওয়ার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় মামলা দিয়ে রোজিনাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পরের দিন ১৮ মে সকাল ৮টায় রোজিনাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। পরে শুনানি শেষে ওই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। একই সঙ্গে রোজিনার জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (২০ মে) নির্ধারণ করেন আদালত। তবে ওইদিন শুনানি শেষ হলেও আদেশ রবিবার (২৩ মে) দেওয়া হবে বলে জানান আদালত।
রোজিনাকে হেনস্তা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিভিন্ন সংগঠন, দল ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও রোজিনার গ্রেপ্তারের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুক্তি দাবি অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া রোজিনাকে থানায় সোপর্দ, মামলা দায়ের, সারা রাত থানায় রাখা, আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন এবং জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ প্রকাশ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। তাঁর মুক্তির দাবিতে অব্যাহত আছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচি।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত