27 C
Dhaka
সোমবার, মে ২৯, ২০২৩

খালেদা জিয়ার পাসপোর্টে যেসব শর্ত ছাড়াই দ্রুত পাচ্ছে

করোনা আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) জন্য আবেদন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্টের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আবেদনকারীর স্বাক্ষর থাকা বাধ্যতামূলক হলেও খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে সেই ‘শর্ত শিথিল’ করা হয়েছে।

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের ফি জমা দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সেটি দেওয়া হবে। ২০১৯ সালে পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তার পক্ষে আবেদন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তিনি দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট পাবেন।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হলে ফলাফল আবারও পজিটিভ আসে। এরপর কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথম দফায় পরীক্ষা করে বাসায় ফেরার পর দ্বিতীয় দফায় ২৭ এপ্রিল তাকে ফের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার ভোরের দিকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

এদিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তার ফুসফুস থেকে তরল জাতীয় পদার্থ (ফ্লুইড) অপসারণ করা হয়েছে। তার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মাত্রা ওঠানামা করছে। এছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে।

এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার জোর আলোচনা শুরু হয়। খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার বিষয়ে আলাপ করেন।

এদিকে এভার কেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় অবস্থা পর্যালোচনা করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করেন। সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দলের চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন।

একটি সূত্র জানায়, বিদেশ নেওয়ার অনুমতি পেতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেন খালেদা জিয়ার পরিবার। সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জমা দেন।পরে আবেদনপত্রটি পর্যালোচনার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানের বাসায় খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে দ্রুতই জানানো হবে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আবেদনের সিদ্ধান্ত আজ নয়, তবে দ্রুতই জানানো হবে।এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সরকারের নির্বাহী আদেশে গত বছর ২৫ মার্চ মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর তার মুক্তির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। যে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছিল সরকার তাতে শর্ত ছিল তিনি বিদেশে যেতে বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন না। এখন তাকে বিদেশ যেতে হলে সরকারের নির্বাহী আদেশের শর্ত শিথিল করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার সেই শর্তটি শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না। এটা নির্ভর করছে একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর। এর আগে, গত বছর মার্চে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল খালেদা জিয়ার পরিবার। এ খবর দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালে এমনটাই প্রকাশ করেছে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,785FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles