‘পিয়নের একটি নিয়োগ দিলে দুই হাজার আবেদন, এক হাজার মাস্টার্স পাস’

| আপডেট :  ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৫  | প্রকাশিত :  ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২৫

গাজীপুরে ছোটবড় পাঁচ হাজারের বেশি শিল্প-কারখানা আছে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘এসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ শ্রমিক। কিন্তু দেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর শ্রমিক বিদেশে যান। তারা বিদেশে ৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন পান। অথচ তাদের শ্রমিকরা অন্য দেশে লাখ টাকা বেতন পান। কারণ তারা দক্ষ শ্রমিক। যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ শতাংশের বেশি উচ্চশিক্ষিত নেই। তাদের অত বেশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দরকার নেই। এজন্য কারিগরি শিক্ষায় মনোযোগ দিয়েছে আমাদের সরকার।’

শনিবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের আয়োজনে শহরের রাজবাড়ি মাঠে দুই দিনব্যাপী চাকরি মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।

দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে বেকার তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘এসব বিশ্ববিদ্যালয় বেকার তৈরির কারখানা হয়ে গেছে। এতে রাষ্ট্রের সম্পদ ও মেধার অপচয় হচ্ছে। এজন্য আমাদের পাঠ্যসূচি পরিবর্তন হচ্ছে, যুগোপযোগী করা হচ্ছে, যেন বেকার সৃষ্টি না হয়। জেলা প্রশাসক পিয়নের একটি নিয়োগ দিলে দুই হাজার আবেদনের মধ্যে এক হাজার থাকে মাস্টার্স (এমএ) পাস। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ শিক্ষা নিয়ে পিয়ন হতে চায়। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করলো, অথচ সেটা বাস্তবে কোনও কাজে লাগছে না।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ড. কুদরাত-এ-খুদা জাতীয় শিক্ষা কমিশন করেছিলেন উল্লেখ করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কুদরাত-এ-খুদা জাতীয় শিক্ষা কমিশন প্রণীত সুপারিশমালায় বলা হয়েছিল, সাধারণ শিক্ষার দরকার নেই। মুষ্টিমেয় লোক উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবে। অন্যরা টেকনিক্যাল শিক্ষা অর্জন করবে, ভোকেশনাল শিক্ষা নেবে। যে শিক্ষা একজন ব্যক্তি কাজে লাগাতে পারবে। যেটা ব্যক্তির জীবনে কাজে লাগবে।’

মেলার আয়োজক গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘গাজীপুরে প্রচুর প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে চাকরি পাওয়া সম্ভব। চাকরিপ্রার্থী ও চাকরিদাতার মধ্যে যাতে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, সেজন্য আমরা মেলার আয়োজন করেছি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষিত প্রজন্ম প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের সংস্পর্শে এসে নিজেদের ঘাটতিগুলো বুঝতে পারবেন, কোনও মাধ্যম বা তদবির ছাড়াই কম সময়ে চাকরির সুযোগ পাবেন। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে। মেলায় বেক্সিমকো, স্কয়ার, নেসলে, ওয়ালটন, প্রাণ-আরএফএল ও বাটাসহ দেশসেরা ৪০টি মতো প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। আশা করছি, রবিবার মেলার শেষে এখান থেকে অন্তত ১২০০ লোকের চাকরির সুসংবাদ দিতে পারবো আমরা।’

জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দীন মিয়া, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানসহ বিভিন্ন শিল্প-কারখানার প্রতিনিধিরা।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত