লঙ্কানদের বোলিং দাপটে ১৬৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ

| আপডেট :  ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০৭:২১  | প্রকাশিত :  ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০৭:২১

এশিয়া কাপ নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো গুটিয়ে যায় টাইগাররা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভারে ১৬৪/১০ (শরিফুল ২*; মোস্তাফিজুুর ০, তাসকিন ০, শান্ত ৮৯, শেখ মেহেদী ৬, মিরাজ ৫, মুশফিক ১৩, হৃদয় ২০, সাকিব ৫, নাঈম ১৬, তানজিদ তামিম ০)

মূল বোলারদের ছাড়াই বাংলাদেশের বিপক্ষে এশিয়া কাপ অভিযানে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। বলা হচ্ছিল খর্ব শক্তির বোলিং। কিন্তু সেই বোলিং দিয়েই বাংলাদেশকে ১৬৪ রানে বেঁধে ফেললো টুর্নামেন্টের অন্যতম আয়োজকরা। তাতে সাকিব আল হাসানের শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ হলো। ৩৬ রানে তিন উইকেট পড়ার পর লড়াই করার মতো সামর্থ্য দেখিয়েছেন শুধু তাওহীদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৯ রান যোগ করেন তারা। তার পর মুশফিক শান্তর কিছুক্ষণের সঙ্গী হলেও আদতে ওই জুটি ভাঙাই কাল হয়ে দাঁড়ায় লাল-সবুজদের। লঙ্কানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রানই তুলতে পারছিল না। এই চাপ কাটাতে গিয়েই বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। একার লড়াইয়ে শুধু শান্তই সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেছেন।

৩২ রানে পেসার পাথিরানা ৪ উইকেট নিলেও অফস্পিনার মাহিশ থিকশানাকেই বেশি কৃতিত্ব দিতে হবে। ৮ ওভারের স্পেলে কৃপণ ছিলেন একমাত্র তিনি। ১৯ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট।

শান্ত ফিরতেই আউট তাসকিন

আগের ওভারে শান্তর বিদায়ের পর শেষ মুহূর্তে কোনও অবদান রাখতে পারেননি তাসকিন। পাথিরানার বলে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফিরেছেন।

একার লড়াইয়ের পর ৮৯ রানে আউট শান্ত

বিপদের সময় হাফসেঞ্চুরি, তার পর হৃদয়ের সঙ্গে জুটিতে দারুণ বার্তা দিচ্ছিলেন শান্ত। বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। শেষ পর্যন্ত ৪১.২ ওভারে থিকশানার ঘূর্ণিতে ৮৯ রানে ফিরেছেন তিনি। ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন। তার ১২২ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার।

মেহেদীর বিদায়ে পড়লো সপ্তম উইকেট

আগের ওভারে লঙ্কান কিপারের ভুলে বাঁচলেও পরের ওভারে শেষ রক্ষা হয়নি মেহেদীর। দুনিথ ভেল্লালাগের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউতে ফিরেছেন ৬ রানে। অপরপ্রান্তে শান্ত একার লড়াই চালিয়ে গেলেও তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি মেহেদী।

লঙ্কান উইকেটকিপারের ভুলে বাঁচলেন মেহেদী

৩৯.১ ওভারে লঙ্কান উইকেটকিপার মেন্ডিসের ভুলে বেঁচে যান নতুন ব্যাটার শেখ মেহেদী। নাহলে বিপদ আরও বাড়তে পারতো। থিকশানার বলে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করেন মেন্ডিস। প্রথম দফায় বল ধরতে পারেননি। দ্বিতীয় চেষ্টায় স্টাম্প ভাঙলেও ততক্ষণে নিরাপদে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাটার।

মিরাজের রান আউটে আরও বিপদে বাংলাদেশ

শান্ত-হৃদয়ের জুটি ভাঙতেই ইনিংসের দৃশ্য বদলে গেছে বাংলাদেশের। লঙ্কান বোলাররা টাইট বোলিংয়ে রানের রাশ টেনে ধরেন। তখন চাপ মুক্ত হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন নতুন নামা ব্যাটাররা। মুশফিকের আত্মাহুতির পর অযথা রান আউটের শিকার হয়েছেন মিরাজ। ৩৬.৩ ওভারে রাজিথার বলটি খেলেছিলেন মিরাজ। শান্ত তাতে রান নেওয়ার তাড়া দেখাতে গিয়েই বিপদ ডেকে আনেন। মিরাজ সেভাবে আগ্রহ না দেখালেও শান্ত দৌড়ে চলে আসেন স্ট্রাইকিং প্রান্তে। ততক্ষণে স্টাম্প ভেঙে দিয়েছেন রাজিথা। মিরাজ পপিং ক্রিজের বাইরে থাকায় রান আউট হন তিনি।

মুশফিকের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ

হৃদয়ের আউটের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মুশফিক-শান্ত। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের রাশ টেনে ধরেছিলেন লঙ্কানরা। বাড়ছিল ডট বলের সংখ্যাও। মুশফিক এই মুহূর্তে স্কোরবোর্ড গতিশীল করতে গিয়ে আউট হন ৩৩তম ওভারে। পাথিরানার বাউন্সারে আপার কাট করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকমতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি। ফলাফল মুশফিক ডিপে করুনারত্নের ক্যাচ হয়েছেন ১৩ রানে। ৫৩ বলে এই জুটিতে যোগ হয় ৩২ রান।

চাপের মুহূর্তে শান্তর হাফসেঞ্চুরি।
চাপের মুহূর্তে শান্তর হাফসেঞ্চুরি।
শান্তর হাফ সেঞ্চুরির পর আউট হৃদয়

চাপের মুখে দায়িত্বশীল ব্যাটিংটা করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ রানে জীবন পেয়ে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৬৬ বলে। পয়েন্ট দিয়ে দাসুন শানাকাকে চার মেরে ফিফটি উদযাপন করেছেন। এই সময় দারুণ জুটিতে তার সঙ্গে অবদান রাখছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু শান্তর ফিফটির এক বল পরই লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকার বলে লেগ বিফোর হন তিনি। ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে খেলতে এসে বলের লাইন মিস করেছিলেন। এলবিডাব্লিউর আবেদনের পর রিভিউ নিয়ে তাকে থামান শানাকা। ৫৯ রানের জুটিতে হৃদয় খেলেন ২০ রানের ইনিংস।

হৃদয়-শান্ত জুটির হাফ সেঞ্চুরি

তাওহীদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দল তাদের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছে। তারা দুজনে মিলে স্কোরবোর্ডে পঞ্চাশ রান যোগ করে ফেলেছেন।

ব্যর্থ হয়ে ফিরছেন সাকিব।
ব্যর্থ হয়ে ফিরছেন সাকিব।
কুশলের দুর্দান্ত ক্যাচে প্যাভিলিয়নে সাকিব

মাথিশা পাথিরানার বলে মাত্র ৫ রানে আউট হলেন সাকিব আল হাসান। তার ব্যাট ছুঁয়ে উড়ন্ত বল বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ধরে ফেলেন কিপার কুশল মেন্ডিস। ৩৬ রানে নেই বাংলাদেশের তিন উইকেট।

ধনাঞ্জয়ার প্রথম ওভারে ফিরলেন নাঈম

ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা বল হাতে নিয়েই সফল। তার চতুর্থ বলে আগেভাগে শট নিতে গিয়ে পয়েন্টে পাথুম নিশাঙ্কার ক্যাচ হলেন নাঈম শেখ। ২৩ বলে ৩ চারে ১৬ রান করেন তিনি। নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তার জুটি ২১ রানের।

জীবন পেলেন শান্ত

পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে মিড অনে দাসুন শানাকার হাতে জীবন পেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ রানে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক।

অভিষেকে ডাক মারলেন তানজিদ তামিম

দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইকে যান তানজিদ হাসান তামিম। মাহিশ ঠিকশানার বল লাগে তার প্যাডে। পরের বলও লাগলো প্যাডে, এবার এলবিডাব্লিউর আবেদন। আম্পায়ার আউটের সংকেত দেন। মাত্র ২ বল খেলে অভিষেকে শূন্য হাতে বিদায় নিলেন বাংলাদেশের যুব বিশ্বকাপ জয়ী ব্যাটার। দলের চার রানে ভাঙলো উদ্বোধনী জুটি।

নাঈমের বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুললো

নাঈম শেখ ও তানজিদ হাসান তামিমের ওপেনিং জুটি রানের খাতা খুলতে সময় নিয়েছে চার বল। চতুর্থ বলে কাসুন রাজিথাকে ড্রাইভ করে কাভার দিয়ে চার মারেন নাঈম।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

এশিয়া কাপে অন্যতম আয়োজক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

ক্যান্ডির পাল্লেকেলেতে এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলো তানজিদ হাসান তামিমের। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গে জুটি গড়বেন নাঈম শেখ।

গত জুলাইয়ে এসিসি ইমার্জিং কাপে কলম্বোতে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান তানজিদ তামিম। এবার সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে হবে জাতীয় দলের সঙ্গে।

টসের পর বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, ‘শুষ্ক উইকেট, আশা করি ভালো রান হবে। আমাদের সেরা পারফরম্যান্স করতে হবে, কারণ শ্রীলঙ্কা তাদের মাঠে খুব ভালো দল। আজকের ম্যাচ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে, ১০০ ওভারের খেলায় তাদের চেয়ে আমাদের ভালো খেলতে হবে। তিন স্পিনার ও তিন সিমার দলে।’

বাংলাদেশ একাদশ: নাঈম শেখ, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিশাঙ্কা, দিমুথ করুণারত্নে, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), দুনিথ ভেল্লালাগে, মাহিশ থিকশানা, মাথিশা পাথিরানা, কাসুন রাজিথা।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত