চুরির অপবাদে নির্যাতনে নিখোঁজ কিশোর, সাত দিনেও উদ্ধার হয়নি
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর গলাচিপায় চুরির অপবাদে নির্যাতনের শিকার সেই কিশোর মুন্নার নিখোঁজের সাত দিনেও সাত দিনেও উদ্ধার হয়নি। এতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হজরত আলী এখনো পলাতক। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করলেও আদালতে জামিন পেয়েছেন দুজন।
এদিকে ছেলের উদ্ধারে আদালত আর থানার বারান্দায় ঘুরছেন নিখোঁজ মুন্নার বাবা শাহজাহান কমান্ডার ও মা হাসিনা বেগম।
শাহজাহান জানান, ‘আমার পোলাডারে গাছের লগে বাইন্দা দুই-তিনজনে মিল্লা মারছে, আমি মোবাইলে দেখছি, সহ্য করতে পারি নাই। একবারের লাইগাও পোলাডার মুখটা দেখতে পারি নাই। কই আছে কী করতে আছে আল্লাহ ভালো জানে। আমার পোলাডারে আপনারা ফেরত দেন। পুলিশের কাছে গেছি হেরাও কিছু কইতে পারে না।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাসিনা বেগম জানান, ‘আমার ছেলে বাঁইচা আছে না-কি মইরা গেছে কিছুই কইতে পারি না। আমার পোলাডা মইরা গেলে অন্তত লাশটা ফেরত দেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিবারের অন্য সদস্যরা ঢাকায় থাকায় কিশোর মুন্না গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়ায় মামার বাড়ি থাকতো। তবে গত ৯ মে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মামাবাড়ির লোকজন তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তিনদিন ধরে নির্যাতন চালান। ১১ মে মধ্যরাত থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মুন্নার নির্যাতনের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হলে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়। ১৩ মে তার মা বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ ওই দিনই মুন্নার মামি মমতাজ বেগম (৪৫), মামাতো বোন তানিয়া (৩০) ও প্রতিবেশী শামীমকে (৪০) গ্রেফতার করে। তবে আদালত মানবিক দিক বিবেচনা করে মমতাজ ও তানিয়াকে জামিন দেন। এখনো মামলার প্রধান অভিযুক্ত হজরত আলীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
গলচিপা আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম আহম্মেদ জানান, ‘এটি একটি অমানবিক কাজ হয়েছে। এভাবে কোনো মানুষকে মারতে পারে না। আমরা চাই দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক।’
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, ‘আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি ভিকটিমকেও উদ্ধারেও চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত