ঘুষের বিনিময় একই স্থানে দুই খেয়া ঘাট, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

| আপডেট :  ২২ মে ২০২২, ০১:৩৩  | প্রকাশিত :  ২২ মে ২০২২, ০১:৩৩

পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার একই স্থানে দুটি খেয়াঘাট দেয়ায় অভিযোগে গোলখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

একইস্থানে ভিন্ন খেয়াঘাট দেখিয়ে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে টাকার বিনিময়ে ইজারা দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন ও ঘাট ইজারা নেয়া খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে।

পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রোখসানা পারভিন এই গ্রেফতারি পরোয়ানার এ আদেশ দেন।

এর আগে, গোলখালী ইউনিয়নের বড়গাবুয়া খেয়াঘাটের প্রকৃত ইজারাদারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি এবং সাত লাখ টাকা ঘুষের বিনিময় অবৈধভাবে আরেক ইজারাদারকে খেয়াঘাট ইজারা দেয়ার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় চেয়ারম্যান নাসির ও খলিলুরের বিরুদ্ধে একই আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন পটুয়াখালীর দুদকের সহকারী পরিচালক নাজমুল হুসাইন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকে পলাতক রয়েছেন নাসির উদ্দিন ও খলিলুর। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।

দুদকের অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পটুয়াখালীর গলাচিপা এবং বরগুনা জেলার আমতলীর মধ্যবর্তী নদী গোলখালী। এই নদীতে বড়গাবুয়া খেয়াঘাটটি আন্তঃজেলা খেয়াঘাট।

২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ঘাটটি ইজারা পান রিয়াজ মিয়া। পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ায় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন রিয়াজকে ইজারা প্রদানে বাধা দেন। এক পর্যায়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে নাসির সাত লাখ টাকা ঘুষের বিনিময় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আগেরই স্থানেই বড়গাবুয়া টু বড়গাবুয়া লিখে খলিলুর রহমানকে ইজারা দেন।

বিষয়টি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, সরকারি ইজারা প্রদান করা খেয়াঘাটের দুই মাইলের মধ্যে নতুন কোনো খেয়াঘাট সৃষ্টি বা নতুন নামে কোনো খেয়াঘাটের ইজারা দেয়ার বিধান স্থানীয় সরকার আইনের কোথাও নাই।

এরপরও চেয়ারম্যান নাসির ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতার প্রভাবে ঘুষের বিনিময়ে একই স্থানে নতুন নাম দিয়ে ঘাটের ইজারা দেন।

এ ঘটনার পর প্রকৃত ইজারাদার রিয়াজ উদ্দিন ২০২০ সালের ১৩ মার্চ পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুর্নীতি দমন আইনে নাসির ও খলিলুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তখন আদালত মামলটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদক পটুয়াখালী অফিসকে আদেশ দেন।

দুই বছর তদন্ত শেষে ৮ মার্চ পটুয়াখালী দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক নাজমুল হুসাইন চেয়ারম্যান নাসির ও খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেন। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

মামলার বাদী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান নাসিরের কারণে আমি আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। নানাভাবে হয়রানির শিকারও হয়েছি। আমাকে বার বার প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছে। আমি বিচারের জন্যই মামলা করেছি।

‘আশা করি আদালত সঠিক বিচার করবে। গ্রেফতারি পরোয়ানার পরপরই চেয়ারম্যান নাসির গা ঢাকা দিয়েছে।’

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত আনোয়ার হোসেন জানান, ‘এখনও আদালতের কপি হাতে পাইনি। ওয়ারেন্টের কপি পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত