জনগণ ভোট না দিলে ক্ষমতা ছেড়ে উঠে আসব :ওবায়দুল কাদের

| আপডেট :  ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৬:১৮  | প্রকাশিত :  ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৬:১৮

নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে মন্তব্য করে আলমগীরের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম বার বার নির্বাচনে না আসার মতো শিশুসুলভ বক্তব্য প্রদান করে যাচ্ছেন। তবে দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, সরকারের পরিবর্তন আনতে হলে নির্বাচনের বিকল্প আর কিছু নেই। যদি সরকারের পরিবর্তন চান, তাহলে নির্বাচনে আসতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই- মির্জা ফখরুল সাহেব, সরকারের পরিবর্তন যদি চান, সোজা কথা হলো নির্বাচনে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশবাসীকে স্বৈরশাসন, দুর্নীতি-লুটপাট সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা ব্যতীত জনগণের জন্য কল্যাণকর কোন কিছুই উপহার দিতে পারেনি। হাওয়া ভবন খুলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশকে পরিণত করা হয়েছিল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্বর্গরাজ্যে।’

২০০৪ সালের ঘটনা তুলে ধরে বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপির) অবৈধ ক্ষমতাকে নিষ্কণ্ঠক করতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তাদের রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদের আগ্রাসী রূপ দেশের জনগণকে দুঃশাসন ও শোষণের যাতাকলে পিষ্ট করেছে। বিএনপির সময় দেশে কোনো উন্নয়ন ও অগ্রগতি হয়নি বলেই আজকে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ্বালা করে। এ কারণেই তারা গুজব ও অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের গৃহীত জনকল্যাণকর মেগাপ্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ এনে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালায়।’

কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর মতো মেগাপ্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছে দেশের জনগণ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে।’

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবিলায় সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও ভিশনারি নেতৃত্বে সফলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বসভায় বাংলাদেশের সফলতা প্রশংসিত হয়েছে।’

আন্তর্জাতিক তথ্যের ভিত্তিতে কাদের বলেন, ‘জাপানের প্রভাবশালী নিক্কি মিডিয়া গ্রুপ ও লন্ডনের ফাইনান্সিয়াল টাইমস কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত ‘নিক্কি কোভিড-১৯ রিকাভারি ইনডেক্স’ অনুযায়ী কোভিড-১৯ অতিমারি হতে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১২১টি দেশের মধ্যে ৫ম ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। জাতির যে কোনো সঙ্কটে সকল রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসবে; দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জনগণের পাশে থাকবে। এটাই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রধানতম দায়িত্ব। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও সঙ্কটে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে সঙ্কটকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পরিস্থিতিকে ভয়াবহতার দিকে ঠেলে দিতে সকল ধরনের অপচেষ্টা চালায়। বিএনপির রাজপথের শক্তি যত হ্রাস পাচ্ছে মিডিয়ার সামনে তাদের নেতাদের হাস্যকর তর্জন-গর্জন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করতে করতে বিএনপির দেশবিরোধী চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তারা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নেতৃবৃন্দ দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং জনগণের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড পরিহার করবে। অন্যথায়, বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করবে।’

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত