মাঠ ছাড়বে না বিএনপি লক্ষ্য চূড়ান্ত আন্দোলন

| আপডেট :  ২৯ আগস্ট ২০২২, ০৫:৩৮  | প্রকাশিত :  ২৯ আগস্ট ২০২২, ০৫:৩৮

পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার কথা ভাবছেন দলটি। দেশের নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে ২২ আগস্ট থেকে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এরই মধ্যে আগামী কয়েক মাস এভাবেই মাঠ গরম রাখবে দলটি। এরপর মোক্ষম সময়ে সরকার পতনের এক দফা নিয়ে রাজপথ দখলের চিন্তাভাবনা রয়েছে । চূড়ান্ত আন্দোলনের আগেই সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করা হবে। যারা বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে তাদেরও মাঠে নামানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়েরর একাধিক নেতা জানান, সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। তৃণমূল থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন আরও বেগবান করা হবে। হামলা-মামলা কিংবা গ্রেফতার কোনো কিছুতেই রাজপথ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাধা আসলে আপাতত পালটা হামলা এড়িয়ে কৌশলে কর্মসূচি পালনে কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কখন প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে তা সময়মতো হাইকমান্ড থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে যে কোনো বাধা রাজপথে মোকাবিলা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান দলের স্থায়ী কমিটির এক নেতা।

এদিকে ৩০ আগস্ট তৃণমূলে চলমান কর্মসূচি পর্যালোচনা করবে দলটির হাইকমান্ড। বাধার কারণে যেসব স্থানে কর্মর্সূচি পালন করা সম্ভব হয়নি তা পুনরায় করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। পাশাপাশি আরও কমর্সূচি দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েও আলোচনা হবে। এছাড়া দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে মাঠে থাকবে বিএনপি। আলোচনা সভা, র‌্যালিসহ পালন করা হবে নানা কর্মসূচি।

তৃণমূলে দুদলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লেও কেন্দ্রে সেই ছোঁয়া এখনো লাগেনি। দুদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে চলছে বাগযুদ্ধ, রাজপথ দখল পালটা দখলের হুঁশিয়ারি। সেপ্টেম্বরে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোতে রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমরা গোড়া থেকে আন্দোলন শুরু করতে চাই। বিএনপির গোড়া বা আন্দোলনের সূতিকাগার হচ্ছে তৃণমূল। সেখান থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আন্দোলন করলে হামলা হবে, মামলা হবে এমনকি গ্রেফতার হবে। এখন নেতাকর্মীদের এসব সামলে নেওয়ার সময় এসেছে। যতই হামলা হোক আমরা আন্দোলন থেকে সরব না। জনগণকে সম্পৃক্ত করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, বিএনপির গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় সরকার। কিন্তু আমরা সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেব না। কর্মসূচি পালনে আমরা আমাদের কৌশলে এগোতে চাই। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে যা যা প্রয়োজন আমরা তাই করব।

এদিকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর জেলার আহ্বায়ক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, তৃণমূলে বিএনপির কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ঢল দেখে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা বেছে নিয়েছে হামলা ও মামলার পথ। শুধু নেতাকর্মীদের নয়, বাড়িঘরে হামলা শুরু করেছে। কিন্তু আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের কর্মসূচি পালন করতে চাই। সহিংসতা নয়, আমাদের মূল লক্ষ্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করা। পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এ সরকারের পতন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। তিনি বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পেছনে যাওয়ার উপায় নেই। দেওয়াল এতটাই লম্বা তা টপকানোও সম্ভব নয়। তাই এখন সামনের দিকে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তৃণমূলে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা বন্ধ হবে না। বরং সামনে এ আন্দোলনের গতি আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত