টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মুশফিকের যত অর্জন
টেস্ট ও ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মুশফিকুর রহিমের পারফরম্যান্স খুব একটা উজ্জ্বল নয়। তার ব্যাটিং গড় ১৯.৪৮, স্ট্রাইকরেট ১১৪.৯৪, যা কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে এই মাপের ব্যাটারের জন্য সন্তোষজনক নয়।
এমন পারফরম্যান্স নিয়ে শেষ দিকে বিসিবির চক্ষুশূলে পরিণত হন মুশফিক। কিপিংয়ের গ্লাভস হারান নুরুল হাসান সোহানের কাছে। জিম্বাবুয়ে সফরে টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদই পড়েন, যদিও বিসিবি বিষয়টিকে মুশফিকের ‘বিশ্রাম’ বলে জানিয়েছিল।
এরপর হজ শেষে দেশে ফিরে ফের সুযোগ পেলেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপে। সেখানে নিজেকে প্রমাণের বদলে উল্টো চরম ব্যর্থ হলেন।
এবার মুশফিককে ছেড়ে কথা বলেনি দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিশেষ করে শ্রীলংকা ম্যাচে ক্যাচ মিস, ক্যাচ নিয়েও রিভিউ না নিতে পারায় তার ব্যর্থতা সমালোচনাকে প্রবল করে।
আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে সব সমালোচনা থামিয়েই দিলেন মুশফিকুর রহিম। এশিয়া কাপ থেকে দেশে ফেরার পরদিনই টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানালেন ৩৫ বছর বয়সি এই ক্রিকেটারের।
কেমন ছিল মুশফিকের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার?
ক্রিকেটের এই খুদে সংস্করণে ১৬ বছরের ক্যারিয়ার মুশফিকের। খেলেছেন ১০২টি ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে ১০০-এর বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা ৩ ক্রিকেটারের একজন মুশফিক।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রথম কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে পা রাখেন ওয়ানডে ও টেস্টের মি. ডিপেন্ডেবল। ১৫০০ রানের মাইলফলক ছোঁয়া ৪৬ জন তারকার মধ্যে তিনি একজন। তবে টি-টোয়েন্টির মেজাজে এ মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। কখনো মারকুটে ভূমিকায় দেখা যায়নি তাকে।
যে কারণে তার স্ট্রাইকরেট মাত্র ৭২। ব্যাটিং গড় মাত্র ১৯.৪৮। ১৫০০ রান করা ব্যাটারের মধ্যে মুশফিকই একমাত্র, যার ব্যাটিং গড় ২০-র নিচে। এক কথায় ১৫০০ রানে বিশ্বের সবচেয়ে ‘বাজে’ মুশফিক।
১০২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯৩ ইনিংসে ব্যাট করেছেন মুশফিক। অর্ধশতক ছুঁতে পেরেছেন মাত্র ৬ বার।
২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে স্বাগতিক শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারসেরা ৩৫ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস।
অবশ্য উইকেটরক্ষক হিসেবে নিজের দ্বিতীয় দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করেছেন মুশফিক।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে উইকেটরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের অধিকারী ক্রিকেটারদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন মুশফিক।
১৬ বছরের ক্যারিয়ারে উইকেটরক্ষক ক্যাচ-স্টাম্পিং মিলিয়ে ৬২টি ডিসমিসাল রয়েছে তার ঝুলিতে। এই তালিকায় তার সামনে রয়েছেন কেবল ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি (৯১ ডিসমিসাল), দক্ষন আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক (৭৭) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীনেশ রামদিন (৬৩)।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবমিলিয়ে ৪২টি ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন, যার মধ্যে উইকেটরক্ষক হিসেবে ৩২টি ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। উইকেটরক্ষক হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ক্যাচের দিক দিয়ে বিশ্বে সপ্তম এই বাংলাদেশি উইকেটরক্ষক।
এছাড়া তার ৩০টি স্টাম্পিং টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে উইকেটরক্ষকদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। এই কীর্তিতে তার সামনে রয়েছেন শুধু ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনি (৩৪ স্টাম্পিং) এবং পাকিস্তানের কামরান আকমল (৩২)।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত