দরজার সামনে ময়লার স্তুপ, সীমানা প্রাচীর ভাংচুরের অভিযোগ

| আপডেট :  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:১২  | প্রকাশিত :  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:১২

বিশেষ প্রতিবেদক: জামালপুর পৌরসভার জঙ্গলপাড়ায় এক পৌর বাসিন্দার বাসার প্রবেশপথে ময়লা ফেলা ও বাসার সীমানা প্রাচীর ভাঙার অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর বিরুদ্ধে। আদালতের নোটিস পেয়েও পুলিশ আমলে নিচ্ছেনা বিষয়টি।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দিনেদুপুরে পৌরসভার দুইটি ময়লার গাড়িতে চারজন লোক এসে ময়লা ফেলে চলে যাচ্ছে। পথচারীসহ অনেকে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছেন কিন্তু কেউ কিছুই বলার সাহস পাচ্ছে না। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র বললেন এ বিষয়ে তার জানা নেই।

ভুক্তভোগী ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম একেএম একরামুল হক রুবেল (৬৩)। তিনি পৌর শহরের বেলটিয়া খুপিবাড়ী এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে পৌরসভার বেলটিয়া খুপিবাড়ী এলাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেন একরামুল হক। ২০০৫ সালে পৌরসভার অনুমতি সাপেক্ষে সীমানা প্রাচীরসহ একটি দ্বিতল ও একটি একতলা বাড়িও নির্মাণ করেন। কিন্তু ২০১৭ সালে পৌর কর্তৃপক্ষ পাশের পলিশা মৌজার বিলুপ্ত একটি হালটে রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। তবে ওই হালটটি বেদখল থাকায় একরামুল হকের ভূমি অবৈধ চিহ্নিত করে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণের নোটিশ দেন। এসময় জমির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞ আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন একরামুল হক। পরে বিজ্ঞ আদালত ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি একরামুলের পক্ষে রায় দেয়।
রায় পাওয়ার পরও তৎকালীন মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি ও পৌর কমিশনার হেলাল উদ্দিন, সার্ভেয়ার এনামুল হক ভিন্ন মৌজায় অবস্থিত একতলা ছাদ বিশিষ্ট একটি বাড়ি, একটি টিনের ঘর, ওয়াল ভাঙাসহ গাছ গাছালি কেটে ফেলে। পরে আদালতের আদেশ অবমাননার জন্য ভায়োলেশন মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরবর্তিতে বিজ্ঞ আদালত সিসি কমিশন গঠন করে পৌর কর্তৃপক্ষের ভাংচুরের ঘটনাটি অবৈধ বলে রিপোর্ট প্রদান করেন। এরপর পৌরসভার দায়িত্ব পান ছানোয়ার হোসেন ছানু। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ির সামনে বিভিন্ন সময় নির্মাণ সামগ্রী রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার চেষ্টা করা হয়।

জানতে চাইলে একরামুল হক রুবেল বলেন, তিনি একা মানুষ। তার কোন ছেলে সন্তান নেই। চাকুরির সুবাদে তাকে দীর্ঘদিন বাইরে বাইরে থাকতে হয়েছে। এ সুযোগে অনেকদিন ধরেই তার এ জমি দখলের চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি ছানোয়ার হোসেন ছানু পৌর মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর হঠাৎ তার বাড়ীর বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ সামগ্রী রাখতে শুরু করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত পুলিশকে পূর্বের আদেশ বহাল রাখার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মেয়র এবং গত ১৮ সেপ্টেম্বর পৌরসভার দুইটি গাড়ীযোগে কিছু লোকজন এসে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা বাসার মূল গেইটে ফেলে রেখে চলে যায়।

তিনি বলেন, গত পাঁচদিন ধরে গেইটের সামনে এখনও ময়লাগুলো পড়ে রয়েছে। ময়লা থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাস্তা লোকজন যাতায়াত করতে পারছে না। ভাড়াটিয়ারাও থাকতে চাচ্ছে না। নিরাপত্তাহীনতায় আমিও পরিবার নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি।
এদিকে আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্বেও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামালপুর সদর থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ গণমাধ্যমকে জানান, আদালতের নোটিশ পেয়েছি, ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আর এটা পৌরসভা বলছে তাদের নিজস্ব জমিতে রাস্তা করছে এখানে আমাদের কিছু করার নাই। আর ময়লার বিষয়টা শুনেছি কিন্তু কে বা কাহারা রেখেছে জানানাই।

পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু মুঠোফোনে গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে তার জানা নেই। ময়লা পরিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় হলে পরিস্কার করা হবে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত