ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ব্যাপারে যা বললেন ছাত্রদল সভাপতি শ্রাবণ
কয়েকদিন আগে ছাত্রলীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নতুন কমিটিতে সাদ্দাম হোসেনকে সভাপতি ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। গত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) কেন্দ্র ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ছাত্রলীগের নতুন কমিটির বিষয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণের সঙ্গে কথা বলেছে চ্যানেল 24 অনলাইন।
ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে ছাত্রদলের সভাপতি শ্রবাণ বলেন, ছাত্র রাজনীতির ঐতিহ্য ছিল অনুমোদিত সব ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি হলে এক সংগঠন থেকে অপর সংগঠনের নেতাদের অভিনন্দন জানানো এবং মধুর কেন্টিনে নতুন কমিটিকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো বা শুভেচ্ছা জানানো, যে সৌজন্যতা বা কালচার থেকে প্রায় ১৪ বছর ছাত্র সংগঠনগুলো বঞ্চিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব প্রতিষ্ঠানে সরকারি সংগঠনের একচ্ছত্র দখলদারিত্বের কারণে মূলত এই সমস্যা। আজ যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা মধুর কেন্টিনে সহাবস্থান থাকতো তাহলে অবশ্যই সহ-সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচনে নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানানো হতো।
তিনি বলেন, আমরা আগেও শুভেচ্ছা জানিয়েছি, বর্তমানেও জানাতে বিশ্বাসী। আমরা শুভেচ্ছা জানাতে চাই, তবে দেখবেন ছাত্রলীগের গত কমিটি ছাত্রদলের নেতৃত্ব সম্পর্কে কটূক্তি করেছে। এরপরও আমরা ছাত্রলীগের গত কমিটিকে অভিনন্দন-শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগ এই শিষ্টাচার রক্ষা করে না। এ কারণে আমরা যখন নিজেদের সংগঠনের দায়িত্ববোধ থেকে শুভেচ্ছা বা অভিনন্দন জানাই তখন সারাদেশের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। কেন ছাত্রদল সব সময় তাদের অভিনন্দন জানাবে? ছাত্রলীগেরও ছাত্রদলকে শুভেচ্ছা জানাতে হবে। সৌজন্যতা এক পক্ষ থেকে আসে না। দুই পক্ষ থেকেই আসা উচিত। তারপরও আমরা বর্তমান নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।
ছাত্রলীগের কমিটি কেমন হয়েছে জানতে চাইলে শ্রাবণ বলেন, এই কমিটির যারা নেতা আছে তাদের সঙ্গে আমাদের সরাসরি মেশার সুযোগ হয়নি বা পরিচয় হওয়ার সুযোগ হয়নি। তারাও সেই চেষ্টা করেনি কখনও ক্যাম্পাসে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার। এই কারণে বর্তমান নেতৃত্ব ভালো না খারাপ, সে সম্পর্কে মতামত দেয়ার আমাদের সুযোগ নেই। তবে আমি মনে করি ছাত্রলীগের এই কমিটি বেস্ট।
তিনি বলেন, বর্তমান নেতৃত্ব থেকে প্রত্যাশা করব তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনৈতিক সহাবস্থানের কালচার ফিরিয়ে আনবেন। তারা দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে বের হয়ে গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা রাখবে। অবশ্যই আমরা বাংলাদেশের বৃহৎ ছাত্র সংগঠন হিসেবে মধুর ক্যান্টিনে এসে সব ছাত্র সংগঠনসহ তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। তবে এজন্য তাদের পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
এই ছাত্রনেতা আরও বলেন, ছাত্রলীগকে আমরা অবশ্যই শুভ কামনা জানাই। তবে সেই শুভ কামনা আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারতাম যদি রাজনৈতিক সেই সৌজন্যতা বা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের ধারাবাহিকতা ছাত্রলীগ রক্ষা করতো। তাহলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতাম। যেহেতু তারা সেই শিষ্টাচার বা রাজনৈতিক সৌজন্যতা অতীতে নষ্ট করেছে এ কারণে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারছি না। তারপরও আমরা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে সাধুবাদ বা শুভেচ্ছা জানাই।
ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বকে অছাত্র বলার বিষয়ে ছাত্রদলের সভাপতি শ্রবাণ বলেন, একটা বিষয় এ কমিটির মাধ্যমে ভালো হয়েছে, ছাত্রলীগ যে কায়দায় ছাত্রদলকে অছাত্র বলে মন্তব্য করে বা যেভাবে মিডিয়ার সামনে ছাত্রদলের নেতৃত্বকে অছাত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, সাদ্দামকে নেতৃত্বে আনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযোগ দিত তাদের সেই অভিযোগকে তারা প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা সাংগঠনিকভাবে অছাত্রের সংজ্ঞা থেকে বের হয়ে আসছে এই বিষয়টি ভালো লক্ষণ।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত