বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় বিষ-কাফনের কাপড় হাতে প্রেমিকের বাড়িতে তরুণী

| আপডেট :  ০৯ জুন ২০২১, ০১:২৪  | প্রকাশিত :  ০৯ জুন ২০২১, ০১:২৪

ঢাকার ধামরাইয়ে বিয়ের বরযাত্রী নিয়ে প্রেমিক যখন অন্যত্র বিয়ে করতে রওয়ানা দেবে ঠিক ওই সময়ে কাকতালীয়ভাবে প্রেমিকা এসে হাজির হয় ওই প্রেমিকের বাড়ির আঙিনায়। বরযাত্রীদের সামনেই এক হাতে বিষের বোতল ও আরেক হাতে কাফনের সাদা কাপড় নিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে দেয় ওই প্রেমিকা। অবস্থার বেগতিক বুঝতে পেরে প্রেমিক বিয়ের পোশাকেই দৌড়ে পালিয়ে গেল বাড়ি ছেড়ে।

ওই প্রেমিকা স্থানীয় স্কাই দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। আর প্রেমিক মানিকগঞ্জ পোড়রা খান বাহাদুর কলেজের ডিগ্রি পরীক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের ঈশাননগর এলাকায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর সঙ্গে একই এলাকার মো. আব্দুল খালেকের ছেলে মো. দিদার হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বিয়ের আশ্বাসে দিদার ওই মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে প্রেম করে আসছে। এখন সে ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে বিয়ে না করে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের ভালুম এলাকার এক তরুণীকে বিয়ে করছে।

পূর্ব নির্ধারিত দিনক্ষণ অনুযায়ী মঙ্গলবার বাদ এশা পারিবারিকভাবে ওই তরুণ তরুণীর বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ওই প্রেমিক দিদার হোসেন দিদার বিয়ের পোশাক পরে বরযাত্রীদের নিয়ে বিয়ে করার জন্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়ির অভিমুখে রওয়ানা দেয়। ঠিক এরই প্রাক্কালে গোপন খবরের ভিত্তিতে জানতে পেরে প্রেমিকা ওই মাদ্রাসা ছাত্রী একহাতে বিষের বোতল আর অপর হাতে কাফনের কাপড় নিয়ে ওই প্রেমিকের বাড়িতে এসে হাজির হয়।

এরপর বরযাত্রীদের সামনেই বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে প্রেমিকা ওই মাদ্রাসাছাত্রী। সঙ্গে শ্লোগান দেয় ‌’দাবি আমার একটাই স্বামী চাই, স্বামী চাই’। ‘হয় বিয়ে না হয় বিষপানে আত্মহত্যা হবে’। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে বলে জানায় বিয়ের দাবিতে অনশনরত ওই তরুণী।

ওই বাড়ি থেকে তাকে বিতাড়িত করতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে অনশনরত ওই মাদ্রাসাছাত্রী।

বিষয়টি নিরসনে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. জয়নাল আবেদীন প্রেমিক-প্রেমিকার দুই পরিবারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বিয়ের দাবিতে অনশনরত ওই প্রেমিকা মাজেদা আক্তার জানায়, এতদিন আমাকে বিয়ে করবে বলে আমার সঙ্গে প্রেম করে আমার সর্বনাশ করেছে। এখন আমাকে বিয়ে না করে অন্য মেয়েকে বিয়ে করছে দিদার। এ কি করে হয়। প্রেম করবে একজনের সঙ্গে আর বিয়ে করবে অন্যজনকে এতবড় অন্যায় হতে দেয়া যায় না। হয় আমার বিয়ে হবে না আমার মরণ হবে।

প্রেমিক দিদারের পিতা আব্দুল খালেক বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে এ মেয়র প্রেমের সম্পর্ক আছে জানলে আমি অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করতাম না। ভেবে স্থির করতে পারছি না এখন আমি কী করব।

ইউপি মেম্বার মো. জয়নাল আলী জানান, ঘটনাটি খুবই জটিল হয়ে গেছে। এরপরও আমি চেষ্টা করছি সমঝোতা করার জন্য। যে কোনো মূল্যেই হোক ঘটনাটি মিটমাট করবই। এতে সন্দেহের অবকাশ নেই।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত