মাদারীপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেহরক্ষির বন্দুকের বাটের আঘাতে নারী আহত

| আপডেট :  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৯  | প্রকাশিত :  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:০৯

সবুজ খান, মাদারীপুর থেকে: মাদারীপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেহরক্ষীর বন্দুকের বাটের আঘাতে মাথা ফেটে সাদিয়া ইসলাম নামে এক নারী আহত হয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মাদারীপুর শিল্প-সংস্কৃতি ও বানিজ্য মেলায় বাচ্চাদের চড়ার জন্য রাখা নৌকা(বোটে) উঠাকে কেন্দ্র করে ওই নারীর সাথে বাকবিতন্ডাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত নারীকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসক তার মাথায় ৪টি সেলাই দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখে। এ ঘটনায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা সম্ভাবনার কথা জানায় ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশ জানায় ভুক্তভোগী অভিযোগ না দিলেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

জানা যায়, মাদারীপুর শিল্প-সংস্কৃতি ও বানিজ্য মেলায় ইউরোপ প্রবাসী স্বামী ও বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসে ডাসার উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের সাদিয়া ইসলাম। মেলায় নৌকায়(বোটে) বাচ্চাদের আগে উঠায় ওই নারী। তখন মাদারীপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশীদের বাচ্চা সেখানে নিয়ে হাজির হয় দেহরক্ষী মো. ইব্রাহিম। ইব্রাহিম ওই নারীকে তার বাচ্চাদের বোট থেকে নামাতে বলে। সাদিয়া তার বাচ্চারা আগে উঠেছে বলে তর্ক করে। তখন ইব্রাহিম বলে এ বাচ্চা ভিআইপি যাত্রী। তাকে আগে উঠতেই দিতে হবে। এ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। সেই সময় ইব্রাহিম তার কোমরে থাকা রিভলবার বের করে বলে আপনি মহিলা না হলে আপনাকে অনেক কিছু করতাম। এর পরে দুজনের হাতাহাতি শুরু হয়। পরে ইব্রাহিম বন্দুকের বাট দিয়ে সাদিয়া ইসলামের মাথায় বারি দিলে সাদিয়ার মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে । তখন তার হাতে থাকা মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতলে নেয়া হয়। সেখানে তার মাথায় ৪টি সেলাই দিয়ে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। ওই ঘটনায় মাদারীপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশীদ ও তার কয়েকজন সহকর্মী আহত ওই নারীকে দেখতে আসেন।

এ ঘটনায় বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগ উভয় জড়িত থাকায় এ ঘটনায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী পরিবারটি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ সঠিক বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। তবে এ অপরাধের জন্য ভুক্তভোগী অভিযোগ না দিলেও অভিযুক্তকে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে জলে জানায় পুলিশ।

ভুক্তভোগীর স্বামী রফিকুল হাসান বলেন, তিনি একজন ইউরোপ প্রবাসী। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দেশের চলমান মেলা দেখতে এসে রক্ত ঝড়াতে হবে ভাবেননি। তাও প্রশাসনের লোকের হাতে। মেলা তো দেশের ভিআইপিদের জন্য ই না। দেশে রেমিটেন্স পাঠান তারা মারও খাবেন তারা এ কেমন বিচার। বিচারকের বডিগার্ডসহ যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিচার চান তিনি।তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগ এ ঘটনার সাথে কোন না কোনভাবে জড়িত তাই সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি সঠিক বিচার পেতে।

ভুক্তভোগী সাদিয়া ইসলাম বলেন, তিনি তার বাচ্চাদের নিয়ে খেলনা বোটে আগে চড়ে বসেন। তখন ইব্রাহিম এসে বোট থেকে নামতে বলেন। ইব্রাহিম বলে জজের বাচ্চা আগে উঠবে। এ নিয়ে তিনি তর্ক করলে তার উপর হামলা করে ইব্রাহিম। প্রথমে কিল-ঘুষিদেয় পরে বন্দুক বের করে মাথায় একাধিক আঘাত করে। মাথায় চারটি সেলাই লেগেছে তার। এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভুক্তভোগী অভিযোগ না দিলেও অভিযুক্তর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি সঠিক তদন্ত করা হবে। অভিযুক্ত দোষি হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত