মাদারীপুর ডাসারে ছাত্রলীগ- ছাত্রদলের সংঘর্ষ, আহত ১৫ গ্রেপ্তার ৪

| আপডেট :  ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩২  | প্রকাশিত :  ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩১

রিপোর্ট মোঃ সবুজ খান মাদারীপুর থেকে: মাদারীপুর ৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহগনমিক্ষা বিষায়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন সহ ৪ নেতা গ্রেপ্তার করেন ডাসার থানা পুলিশ। ডাসার উপজেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি চলাকালীন সময় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে হামলার ঘটনায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খোকন তালুকদার সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে ডাসার থানা পুলিশ। তারা হলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান ওরফে খোকন তালুকদার (৪৫), ডাসার যুবদল নেতা নুরু তালুকদার (৪৫), ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মন্নান সরদার (৫৫) কালকিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শহিদুল ব্যাপারী (৪০)। হামলায় আহত বিএনপি ও ছাত্রদলের ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন কালকিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলু ব্যাপারী (৬০),ছাত্রদল নেতা শামীম মোল্লা (৩০), তরিকুল ইসলাম (২৮), রাসেল মাতুব্বর (৩০), রাজ্জাক সরদার (৫৫), নুরে আলম ছান্টু(৪৫) বনি আমিন (২৫), বায়েজিদ সরদার (৩২), সারাফাত ব্যাপারী (২৫), দুলাল (৩৫), মামুন শিকদার (৩৭)। এ ছাড়াও হামরায় ছাত্রলীগ তিন জন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন আহত হয়েছেন।

তারা হলেন ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফ আশিক (২৫) ও অর্থ সম্পাদক কাজল আহমেদ (২৩), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল কবির (২৬) ও সে”ছাসেবক লীগের নেতা মিল্টন ঢালী (৩৫)। এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা আশিক ও কাজলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ডাসার উপজেলা বিএনপি, পুলিশ ও স্থায়ী সূত্রে জানায়, কেন্দ্রীয় বিএনপির ১০ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মাদারীপুরের পাঁচটি উপজেলায় একযোগে কর্মসূচি পালন করেন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিকেল ৩টায় ডাসার উপজেলায় ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকায় প্যান্ডেল করে কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় ডাসার বাজার আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অনুষ্ঠানে এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এতেই বিএনপির ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেকাকর্মীদের বাকবিতন্ডা বাঁধে। এ সময় ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুর হয়। দুপক্ষের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ডাসার থানা পুলিশ ৩/৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির চার নেতাকে আটক করে পুলিশ।

বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মসূচিকে পন্ড করতে এই হামলা চালিয়েছে।

ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত আমাদের কর্মসূচি যথা সময় শুর করি। নেতাকর্মীরা সবাই আালোচনা শুর করে। তখনই আওয়ামী লীগের নির্দেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আমাদের অনুষ্ঠানে হামলা চালায়। চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে। পরে আমাদের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ শুর করে। পুলিশ আমাদের রক্ষা না করে তাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের ছেলেরা হাতে দের্শী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। পরে আবার আমাদের কেন্দ্রীয় এক নেতাসহ চার জনকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ একক ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের আটক করতে পারে না। আমরা এ হামলা ও আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

অভিযোগের বিষয় ডাসার উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বিএনপি অন্য জেলা থেকে লোক ভাড়া করে এনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শুর করে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও কটুক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেরা তাদের এ ধরণের কথা বলতে নিষেধ করায় তারা উল্টো আমাদের ছেলেদের উপর হামলা করেছে। তাদের উপর কোন হামলা চালানো হয়নি। তাদের হামলায় আমাদের ছাত্রলীগের দুজন গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল নেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

এ ঘটনায় জানতে চাইলে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতাসহ চার জনকে আটক করেছি। আটককৃতদের নেতৃত্বে ছাত্রদল যুবদলের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের দুই জন কর্মীর ওপর হামলা করছে। ছাত্রলীগের দুজন হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ কারণে বিএনপির চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত