সভ্যতার বেহুদা হালচাষ ও শাহী বেদেনামা

| আপডেট :  ০৬ মে ২০২১, ০১:১২  | প্রকাশিত :  ০৬ মে ২০২১, ০১:১২

লোম কাঁটা মিহি হিমেল হাওয়ার পতপত শব্দসুর।মেঘনার জলপেট চিরে দক্ষিণে ধাই ধাই করে চলছে বোট। আবছা অন্ধকার। পশ্চিমাকাশে মাথা তোলা জ্যোৎস্নাপতি। মেঘনার জলের সরলরেখায় উগরে পড়ছে শশীঠাকুরের প্রেমাঞ্জলি। যেন ঢেউয়ে ঢেউয়ে জল-জোছনার জলকেলি লীলা। এ রঙ্গকীয়া দর্শনে বেহুঁশ কচুরিপানাও দ্রুতই ডুব সাঁতারে পথ পাল্টায়ে নেয়।

মা ইলিশ রক্ষায় ৩১/১০/২০ তারিখে অভিযান শেষে ফিরছি স্পীডবোটে। বোট সম্মুখে অগ্রসরমান।

নরসিংদীর করিমপুর বাজারের কাছাকাছি আসতেই কূল ঘেঁষা তহশীল অফিসের বিশালাকার মাঠ জুড়ে মৃদু টেপাটেপি-ঢেপাঢিপি লালচে হলুদ আলো। গোটা বিশেক আলো হবে। কৌতুহলবসত গতি কমাতে বললাম। দ্রতই পরিস্কার হলো ঐ আলোকিত অন্ধকার।২০-২৫ টি টাব্বর পাতানো। ওহহ। এতো বেদে বহর।

কিছুটা বিস্ময় ও অজানা আগ্রহ থেকে বোট ভেড়ানো হলো। বহরের দিকে এগিয়ে যেতেই কে যেন আগেই বহরে গিয়ে বেদে সর্দারকে জানাল এসিল্যান্ড স্যার এসেছেন-আপনাদের সাথে কথা বলবেন। শুনেই বেদে সর্দার হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এলেন।

-বললেন স্যার আপনি এছেছেন আমরা খুছি। আমরা বেদে। জায়গা নাই। তাই আপনার জায়গায় টাব্বর (তাবু) পেতেছি।

-আমি বেমালুম। দৃষ্টি আমার সর্দারের টাব্বরে। সর্দারনী কেমন আছেন।

-বালই আচি। আফনি?

-আমরাও ভাল। ভিতরে আসতে পারি?

-আসেন।বসেন।

-সর্দারনীর ডানে ষোড়শী কন্যা। বামে উঠতি দুই যুবক। সকলেই রাতের ভোজনে ছিল। আমার প্রবেশে কিছুটা জড়োসড়ো। সাদা ভাত। পাতলা স্যালস্যালে ডাল। চিকন কাটা আলু দিয়ে ছোট মাছের বিরান। পরিতৃপ্তির সাথে খাওয়া হলো।

এটা সর্দারের ছই। বেশ পরিপাটি। মাটির উপরে পলি বিছিয়ে তার উপর ছোপ দাগের চাদ্দর পাতা। কিন্তু মাটি হলেও মেঝে মসৃণ। ছইটা বাঁশ-বেত দিয়ে ধনুক ভাঁজে তৈরি। ঘুমচি কালো পলিথিন মোড়ানো ছই। ১০ বাই ৪ হাতের ছই ঘর। গোছানো। অল্প বাসন-ছাই ঘষা উজ্জ্বল। ট্র্যাংক একটি-মুখে তালা গুজে নিশ্চল পাশে বসা।

সর্দারনী মা-খালার ন্যায় আন্তরিক, স্নেহময়ী। উজ্জ্বল শ্যামলা বরণ। ভাব আছে। হাতে বালা ও বাজু। উঁচু খোঁপা ফিতা-কাটা সমেত। পরনে ছাপ দেয়া বাটিক শাড়ি। কিন্তু দৃষ্টি কাড়বে সর্দারনীর নাকের অলংকার। নাক তার ঈষৎ ফোলানো। নাকের উপর ,পার্শ্ব ও নাকের দুই বাঁশি মিলিয়ে কমপক্ষে ১০ টি ছোট-বড় অলংকার ঠাসানো কিন্তু বহরে অর্থবহ। এসব অলংকারের বেশিরভাগ সোনা, রুপা ও পিতলির। সব মিলেই বহরে ভিন্ন অবস্থান সর্দারনীর।

গল্প হলো। তাদের জীবন চরিত জানবার চেষ্টা হলো। হলোও অনেকটা। আন্তরিক। অতিথি পরায়ন। নিখাদ মায়ামাখা চাহনি। শেষে বললাম সাপ খেলা কি রাতে দেখা যায়।

(ইতোমধ্যে টাব্বরের বাহিরে সরদার আয়োজন করেছেন মনে হল)

-হুম যায়। আসেন। (বহরে অনেকটা শোরগোল পড়ে গেছে)

বের হতে হতে হঠাৎ টাব্বরের (তাবু বা ছাউনী) পিছন থেকে অষ্টাদশী বেদে কন্যা সুর করে গান ধরলো—

“খা খা খা বক্ষিলারে খা

ঠক বাজ’রে খা

খেলা দেইখা যে পয়সা না দেয়

তারে খা

তারে কাঁচা ধইরা খা”

খা খা খা বক্ষিলারে খা———-

অষ্টাদশীর হাতে কালনাগিনী। সরদার প্রতি তাঁবু থেকে বিচিত্র সাপ নিয়ে আসলো। একে একে দুধরাজ,গোমা,আলাদ,কালচিতি,ঘরচিতি, গোখরা,কেউটে,নাউজালি,শঙ্খিনী,বালুবোড়া,দাড়াশ, দুমুখো দেখা হলো।

হঠাৎ ৫ বছরের বেদেবয় টিকনা প্যান্ট পড়ে লাউডগা নিয়ে হাজির। চক্ষুচড়ক গাছ। এও সম্ভব। ডরহীন। নিষ্পলক। এটাও পেশা। এটাও নেশা। এটাও জীবন।এটাও সাধন।
কিন্তু এ দিয়ে কি এ যুগে ক্ষুন্নিবৃত্তি হয়। নাকি

সভ্যতার সংকটে তারাও আজ নির্বাক, নিরুপায়, দিকভ্রান্ত।

প্রশ্ন: কতটুকু জানি আমৃত্যু এ জাত বাইদাদের? আসুন একটু জেনে নেই—————————

“বিচিত্র জাত বেদেরা। জাতি জিজ্ঞাসা করিলে বলে, বেদে। তবে ধর্মে ইসলাম। আচারে পুরা হিন্দু, মনসা পূজা করে, মঙ্গলচন্ডী, ষষ্ঠীর ব্রত করে, কালী-দুর্গাকে ভূমিষ্ট হইয়া প্রণাম করে। হিন্দু পুরাণ-কথা ইহাদের কন্ঠস্থ। বিবাহ আদান প্রদান সমগ্রভাবে ইসলাম-ধর্ম সম্প্রদায়ের সঙ্গে হয় না, নিজেদের এই বিশিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যেই আবদ্ধ। বিবাহ হয় মোল্লার নিকট ইসলামীয় পদ্ধতিতে, মরিলে পোড়ায় না কবর দেয়।”

বেদেনী, তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়।

বেদে:

ওরা বেদে। সকলেরই অতিপরিচিতজন। তবে কাছেরও নয়, অতি দূরেরও নয়। সম্পর্ক নেই। কিন্তু দৃষ্টি সীমায় ঘুরেফিরে। সামাজিক ভাববিনিময় ঝাপসা-অবয়বহীন। প্রান্তিক। যাযাবর গোষ্ঠী। এরা ভূমিহীন। দলবদ্ধভাবে বসবাস। বাহন নৌকা। জন্ম-বিয়ে-রঙ্গ-মৃত্যু সবি নৌকায়। এজন্য তাদের জলের জিপসিও বলা হয়।

সাপের খেলা দেখানোর জন্যই এরা বেশি জনপ্রিয়। বেদেদের অঞ্চলভেদে বাদিয়া, বাইদ্যা বা বইদ্যানী নামেও ডাকা হয়। এই নামগুলোর উৎপত্তি অবজ্ঞাসূচক বৈদ্য (চিকিৎসক) থেকে। এরা ওঝাঁ বা বিষবৈদ্য নামেও পরিচিত।

প্রাচীনকাল থেকেই বেদেরা কবিরাজি, ঝাঁড়ফুঁকসহ বিভিন্ন হাতুড়ে চিকিৎসার সাথে জড়িত।

অনেকে দাবী করেন, বেদে শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে বেদুইন থেকে। আরব বেদুইনদের বেদেরা পরিচয় দেয় নিজেদের পূর্বপুরুষ হিসেবে। এদের আদি নাম মনতং। ১৬৩৮ সালে আরাকানরাজ বল্লার রাজার সাথে তারা প্রথম ঢাকায় আসেন। প্রথমে তারা বিক্রমপুরে বসবাস শুরু করেন। পরে বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। দেশের ৯০% বেদে নিরক্ষর।

গোত্র ও পেশা:

বেদে মেয়েরাই কঠোর পরিশ্রমী। ছেলেরা অলস প্রকৃতির। পেশা বা জীবিকাবাহন অনুযায়ী এদের গোত্র নির্ধারিত হয়। ১৩ টি গোত্র সচরাচর পাওয়া যায়। যথা—

১.মালবেদে—শিংগা দিয়ে রক্ত টেনে ব্যথা নিরাময় করে

২.সাপুড়িয়া—সাপ ধরা , খেলা দেখানো,দাঁতের পোকা ফেলানো ও ঔষধ সাদা লজ্জাবতী,তাবিজ বিক্রি

৩.মেল্লছ বা বাজিকর—যাদু দেখানো

৪.সান্দার বা ধামাধন্নী—মাথায় ধামা বা ঝাঁকা নিয়ে গ্রামে চুড়ি,ফিতা বিক্রি

৫.টোলা—বানর খেলা দেখানো

৬.মিরশিকারী—ভূত-প্রেত ও মৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি

৭.বরিয়াল—বড়শি দিয়ে মাছ ধরা ও বিক্রি

৮.মিচ্ছিগিরি—ভাঙ্গা কাঁচ দিয়ে চোখের অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসা

৯.গাইন—ঝিনুক থেকে মুক্তা কুড়িয়ে বিক্রি করে

১০.কুড়িন্দা—হস্তরেখা দেখে ভাগ্য বলে দেয় এবং কূপ-ইন্দিরা-পুকুর থেকে হারানো সোনা/রুপার গহনা কুড়িয়ে দেয়

১১.চাপালি—ঝাঁকায় করে প্রসাধনী বিক্রি

১২.লইয়া বা মানতা বা বাবজিয়া—খালে বিলে মাছ ধরে

১৩.চামরিমা—শারীরিক কসরত দেখিয়ে জীবিকা অর্জন

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:

এদের দেহ সুঠাম। গায়ের রং গভীর কালো। মোঁটুক চুল বা কোঁকড়ানো চুল। আয়ত-কালো চোখ। লম্বাটে গলা।হাবভাবে অনেকটা আদিম প্রকৃতির।

অলংকার ও সাজ:

বেদেরা সাজ ও অলংকার প্রিয়। মেয়েরা ভীষণ সাজে। বাহারি ব্লাউজ পড়ে। বেদে মেয়েরা কোমরে বিছা, বাহুতে বাজু, হাতে বালা, পায়ে আদি মল, গলায় কবজ/মাদুলি, কানে মাকরী, নাকে নাকছাবি/নথ/বালি পড়ে। উঁচু খোঁপা বাঁধে। খোঁপায় কাটা পড়ে।

নৃতাত্তিক পরিচয়:

নৃতাত্ত্বিক বিবেচনায় কিন্তু বেদেরা অনার্য। সেমিটিক বৈশিষ্ট্য নেই। শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তারা আদি অস্ট্রাল বংশোদ্ভূত। কারও মতে, তারা আরাকানের মনতং মান্তা নৃগোত্র থেকে এসেছে। কেউ বলে, বেদেরা সাঁওতালদের বিচ্ছিন্ন অংশ। যারা পারস্যের সাথে বেদেদের সম্পর্ক খোঁজেন, তাদের মতে, বেদেরা সাত শতকে আরবের আলবাদিয়া নামক স্থান থেকে এদিকে এসেছে।

ভাষা:

এরা বাঙালিদের সাথে বাংলায় কথা বললেও তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা। নাম ঠেট বা ঠার বা ঠের। আরাকান ভাষার সাথে এর মিল রয়েছে। এ ভাষা তিব্বতি-বর্মি (সাক-লুইশ) ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এর কোনো লিপি নেই।

ধর্মাচার:

দেশের ৯৯% বেদে মুসলিম। ধর্মাচার মিশ্র। কেউ পীরের অনুসারী, কেউ মনসা বা বিষহরির ভক্ত। আনুষ্ঠানিক ধর্মে সাধারণত এদের আগ্রহ কম। হিন্দু দেবদেবীর স্তূতি করে, বিভিন্ন পার্বণেও অংশ নেয়। তবে আনুষ্ঠানিক পূজা-অর্চনা করে না। বাঙালি মুসলমানদের সাথে সামাজিক সম্পর্ক নেই। বিবাহ মুসলিম ধর্মীয় মতে হলেও রীতিনীতি ভিন্ন। আগের দিনে মারা গেলে তাদের লাশ কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দিলেও এখন মৃতদেহের ঠাঁই হয় কোনো পরিত্যক্ত স্থানে কিংবা নদীর কিনারায়।

সমাজব্যবস্থা:

বেদেরা কৌমসমাজের রীতি পালন করে। তাদের জীবনযাত্রা, সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন গোত্রের মধ্যেই আবদ্ধ। প্রতিটি বেদে পরিবারের আছে নিজস্ব নৌকা। কয়েকটি নৌকা নিয়ে তৈরি হয় একটি দল। আর কয়েকটি দল নিয়ে একেকটি বহর। প্রতিটি বেদে বহরে একজন সর্দার থাকেন। বেদে সম্প্রদায়ের উপগোত্রীয় ও গোত্রীয় সর্দার আছেন। এদের গোত্রপ্রীতি প্রবল।

বৈবাহিক রীতিনীতি:

বেদে সমাজে সাধারণত বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রথার প্রচলন বেশি। বিধবা বিবাহও হয়। বেদেনীরা স্বাধীনচেতা। বেদে যুবক-যুবতীরা স্বেচ্ছায় পরস্পরকে পছন্দ করে বিয়েতে সম্মত হয়। পারিবারিকভাবে আয়োজন হয়। বর-কনেসহ উপস্থিত সবাই নাচগানের মাধ্যমে উৎসবে মেতে ওঠে।

বেদেদের বিয়ের চমৎকার এক রীতির কথা জানা যায়। হবু বর গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালে গিয়ে বসে। তখন হবু বরকে নামাতে কনেকে কথা দিতে হয় শ্বশুর-শাশুড়ি আর সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার। তারপর বরকে আজীবন ভরণপোষণের ওয়াদা করলে তবে সে নিচে নেমে আসে। এরপর তাদের বিয়ে হয়। বহিরাগত কেউ থাকলে বেদে তরুণীরা তাদের বিয়েতে প্রলুব্ধ করে। বিয়ের পর তাকে গোত্রে রাখতে চেষ্টা করা হয়। অন্যদিকে বাইরের যুবক বেদে তরুণীকে বিয়ে করে নিয়ে গেলে তাকে দিতে হয় ক্ষতিপূরণ।
বিয়ে করতে গেলে কনেকে অর্থ দিতে হয় বরের। বিয়ের পর স্বামী যায় স্ত্রীর সংসারে। স্বামী-স্ত্রীতে কখনো ছাড়াছাড়ি হলে সর্দারের নির্দেশে সন্তান ও সম্পত্তি দুজনকে ভাগ করে দেওয়া হয়।

শখ:

এরা পাখি শিকার পছন্দ করে। এ কাজে সরু নল ব্যবহার করে। নলটি প্রয়োজনে ছোট/বড় করা যায়। নলের ঠিক মাথায় থাকে শিকারি শর।

পোশাক:

পুরুষরা পরনে লুঙ্গি আর গায়ে বেপারি শার্ট বা সাইড কাটা ফতুয়া পড়ে। মহিলারা দশ হাত কাপড় দুই টুকরা করে এক টুকরো দিয়ে পেঁচিয়ে লুঙ্গির মতো পরেন। অন্য টুকরো গলায় জড়ান। শরীরে জড়ান-আঙ্গি।

উৎসব:

সাধারণত চৈত্র থেকে জৈষ্ঠ্য মাসে বিয়ে, গান-বাজনা, নাচ উৎসব হয়।

গাওয়াল:

সাধারণত ফসল তোলার মৌসুমে ব্যবসায়িক কারণেই বেদেরা গ্রামে-গঞ্জে পরিভ্রমণ করে। একে গাওয়াল বলে। শীতের শুরুতে অগ্রহায়ন মাসের শেষের দিকে ও আষাঢ় মাসের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত গাওয়াল চলমান থাকে।প্রথম দফায় চৈত্র মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এরা গাওয়াল করে। সাধারণত মহিলারাই বেশি গাওয়াল করে।

সরদার, বিচার ও শাসন ব্যবস্থা:

সরদার বহরের পূজনীয় ও সর্বমান্য ব্যক্তি। তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনিই বহরের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। তিনি বাণিজ্যপথ নির্ধারণ করেন। তিনি সওদাগরির জন্য বাণিজ্য এলাকা নির্বাচন ও বন্টন করেন। প্রশাসনিক ও নিয়ম শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন সর্দার। নিয়ম ভঙ্গকারিকে শাস্তি দেন। বিচারের সময় বাদি ও বিবাদী উভয়ই নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জামানত হিসেবে সর্দারের কাছে জমা রাখে। বিচারে যে হেরে যায় তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। বাজেয়াপ্ত অর্থ খরচ করে বহরের সকলকে খাওয়ানো হয়। সর্দারের ভরণপোষণের দায়িত্ব বহরের। অভ্যন্তরীন শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্দারনীও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

গান:

১.”ও রাণী সালাম বারে বার—
নামটি আমার জ্যোৎস্না বানু আমি—
থাকি লাক্ষার পাড়—
ও রাণী সালাম বারে বার—”

২.”মোরা এক ঘাটেতে রান্ধি-বারি—
আরেক ঘাটে খাই—
মোদের সুখের সীমা নাই—
পথে ঘাটে লোক জমাইয়া মোরা—
সাপ খেলা দেখাই—
ও মোদের সুখের সীমা নাই—”

পুনশ্চ:

সভ্যতার বেহুদা হালচাষে অস্তিত্ব সংকটে এ সম্প্রদায়। চাই রাষ্টীয় পরিকল্পনা, নীতি ও সমব্যথিতা।

লেখক, মো: শাহ আলম মিয়া
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নরসিংদী সদর, নরসিংদী।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত