বাইডেনের বদলে কাকে দেখা যেতে পারে

| আপডেট :  ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১:২৫  | প্রকাশিত :  ০৯ জুলাই ২০২৪, ১১:২৫

ঘরের মাঠে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এক বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়নোর চাপে রয়েছেন তিনি। দল ও দলের বাইরে—সব জায়গায় তার মানসিক শক্তি ও ফিটনিস নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বারংবার নিজ দলের নেতা ও ভোটারদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। উল্টো সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের পরিবর্তে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পকে কে ঠেক্কা দেবে, সে আলোচনা মার্কিন রাজনীতিতে রাখঢাক ছাড়াই হচ্ছে।

বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্পের তালিকায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এগিয়ে থাকলেও আরও বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে চর্চা হচ্ছে। সোমবার (৮ জুলাই) এক প্রতিবেদেন এমন তথ্যই জানিয়েছে আলজাজিরা।

কমলা হ্যারিস: বাইডেনের বিকল্প হিসেবে শুরু থেকেই কমলা হ্যারিসের নাম শোনা যাচ্ছে। ৫৯ বছর বয়সী কমলা একজন সাবেক প্রসিকিউটর এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর। তিনি নির্বাচন করলে খুব সহজে তরুণ মার্কিন ভোটাদের পাশাপাশি কালো ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমর্থকদের টানতে পারবেন। এ ছাড়া গর্ভপাত অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার কমলা নারী ভোটারদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবেন। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য অ্যাডাম শিফ সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি মনে করেন কমলা নির্বাচনে গেলে অপ্রতিরোধ্যভাবে জিতবেন।

তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলার অনুমোদনের হার বাইডেন বা ট্রাম্পের চেয়ে বেশি নয়। জনমত জরিপ সংস্থা ইপসোসের তথ্য অনুযায়ী, ৪৩ শতাংশ ভোটার বলেছেন যে তারা কমলাকে ভোট দেবেন। অন্যদিকে আরেক জরিপে তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাত্র ৩৭ শতাংশ মানুষ অনুমোদন দিয়েছেন।

গ্যাভিন নিউজম: তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর। দীর্ঘকাল ধরে তিনি বাইডেন ও কমলার পক্ষে প্রচারণা করে আসছেন। সম্প্রতি সুইং রাজ্য মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার এই জুটির হয়ে প্রচারণা করেছেন।

তবে এই কাজ করলেও ২০২৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা জানিয়ে রেখেছেন তিনি। আর এখন তাকে বাইডেনের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ কেউ নভেম্বরের সম্ভাব্য কমলা-নিউজম টিকিটের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। ইপসোস তাকে ৩৯ শতাংশ ভোট দিয়েছে।

গ্রেচেন হুইটমার: মার্কিন রাজনীতিতে ব্যাটল ফিল্ড হিসেবে পরিচিত রাজ্য মিশিগানের গভর্নর হুইটমার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একজন তারকা। দুইবারের এই গভর্নর ২০২০ সালে করোনোয় কঠোর লকডাউন নীতি নিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। ২০২২ সালের নির্বাচনে ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হলে মিশিগানে তার জনপ্রিয়তার ভিত আরও মজবুত হয়।

তবে তাকে মূলত ২০২৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ভাবা হতো। কিন্তু ইপসোস জরিপে দেখা গেছে, এখনই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ালে ৩৬ শতাংশ মার্কিন ভোটার তাকে নির্বাচিত করবেন বলে মত দিয়েছেন। যদিও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতিনিধিরা তাকে সমর্থন করবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

জেবি প্রিটজকার: তিনি ২০১৯ সাল থেকে ইলিনয়ের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ধনী পরিবারের একজন সদস্য। একই সঙ্গে গর্ভপাত, ন্যূনতম মজুরি ও স্বাস্থ্যসেবায় মানুষের প্রবেশাধিকার বিষয়ে প্রগতিশীল নীতি ধারণ করেন। তাকে বাইডেনের একজন সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে দেখা হয়। ট্রাম্পকে তুলোধুনো করার ক্ষমতার জন্য তিনি পরিচিত। ইপসোস অনুসারে, প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোটার বলেছেন যে তারা প্রিটজকারকে বেছে নেবেন।

জোশ শাপিরো: পেনসিলভানিয়ার গভর্নর শাপিরো আগে এই রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালে এই সুইং স্টেটের নির্বাচনে স্বাচ্ছন্দ্যে জয়লাভ করেন তিনি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মানুষজন তার প্রতি ইতিবাচক। তবে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ইস্যুতে ভোটাররা বিভক্ত হয়ে পড়তে পারে। শাপিরো একজন ইহুদি। তিনি বেশ আবেগ নিয়ে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের কথা বলে আসছেন। এ নিয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে গভীর বিভাজন তৈরি হয়েছে। সিয়েনা কলেজ এবং স্থানীয় গণমাধ্যমের মে মাসের এক জরিপে দেখা যায়, তার অনুমোদনের হার ৫৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত