আমাকে ‘স্যার’ বলার দরকার নেই: তথ্য উপদেষ্টা
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহত সাংবাদিকদের পরিবারের পাশে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাকে ‘স্যার’ বলার দরকার নেই। আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে এখানে এসেছি। জনগণের দাবি দাওয়া নিয়ে তাদের পক্ষে এসেছি। একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এখানে এসেছি। এখন আমি আপনাদের কাছে সেই সহযোগিতা কামনা করছি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর রোববার (১৮ আগস্ট) সচিবালয়ে প্রথম অফিসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা, শ্রমিকদের পাশাপাশি অনেক সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। আমি জানিনা এখন পর্যন্ত কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব সাংবাদিক এখনও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সবার পরিবারের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত।
তিনি বলেন, আন্দোলন চলাকালে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও। কোথায় কী হচ্ছে আমাদের জানতে দেওয়া হয়নি। এসময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। বরং আমাদের মিসকোড করে বিকৃত তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তারপরও কিছু প্রিন্ট মিডিয়া আমাদের বক্তব্য প্রচার করেছে। হয়তো গণমাধ্যমকর্মীরা ওই সময় হাউজ পলিসি, কিংবা মালিকদের কারণে সঠিক সংবাদ প্রচার করতে পারিনি। আমরা এখন এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। বাক স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ দেখতে চাই না। যদি গণতন্ত্র চাই, তাহলে আমাদের গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
‘আমরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের থেকে শুনেছি, মত প্রকাশের উপর বিভিন্নভাবে বাধা তৈরি করা হয়েছে। ফ্রিডম অব স্পিচ যদি না থাকে, তাহলে ফ্রিডম অব স্পিচ নিশ্চিত হয় না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইন ও বিধি নিষেধ রয়েছে, আমাদের এসব আইন ও বিধি নিষেধ পুনর্বিবেচনা করতে হবে। যাতে বাক স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত না হয়।’ যোগ করেন তিনি।
বিটিভির মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিটিভিকে দেখলে মনে হয় এটা আশি বা নব্বই দশকের বিটিভি। ওই জেনারেশনই বিটিভি দেখে, আর কেউ বিটিভি দেখে কি না জানি না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত গতিশীল ও আধুনিক করা দরকার। সেগুলো খুবই স্থবির অবস্থায় আছে। এর একটা দিক হলো দলীয়করণ, রাজনীতিকীকরণ, আরেকটা হচ্ছে, কনটেন্টগুলো মনে হচ্ছে এই প্রজন্মের জন্য নয়। সেই জায়গা থেকে মনে করি, সব প্রতিষ্ঠানকে আধুনিকীকরণ করা উচিত, মনে করেন এই উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সরকারি একটা প্রতিষ্ঠান, সেখানে কিছু সরকারের অ্যাসাইন করা লোক বসবে, কিছু পদ দখল করে বসে থাকবে, এ রকমটা যাতে না হয়।
সেন্সর বোর্ড, জুরি বোর্ডসহ এই ধরনের যে কমিটিগুলো রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন করা উচিত মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, চলচ্চিত্র নিয়ে আমাদের বেশি কাজ করতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মের চলচ্চিত্র থেকে অনেক আকাঙ্ক্ষা। তরুণ প্রজন্মের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না। সেই আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আমাদের চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকগুলো চলচ্চিত্র সেন্সরড অবস্থায় আছে। সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা উচিত। যদি নীতিমালা ভঙ্গ না হয়, সেই চলচ্চিত্রগুলোকে দ্রুত প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি কিংবা ব্যক্তিগত পরিচয় যাতে বিবেচনায় না নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত