নিখোঁজ বক্তা আদনানকে নিয়ে যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারীর

| আপডেট :  ১৭ জুন ২০২১, ০৬:২০  | প্রকাশিত :  ১৭ জুন ২০২১, ০৬:২০

বর্তমান সময়ের আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান তাঁর গাড়ীচালক ও দুই সঙ্গীসহ গত ১০ জুন মধ্যরাতে নিখোঁজ হয়েছেন। প্রায় ৬ দিন পেড়িয়ে গেলেও এখনও তার সন্ধান মেলেনি। জানা যায়, রংপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে রাত আড়াইটায় স্ত্রীর সাথে সর্বশেষ কথা হয় আদনানের। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি তার বা সঙ্গীদের।

নিখোঁজ হওয়া তরুণ ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান এর সন্ধান চেয়ে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন জনপ্রিয় মুফাসসির মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। বুধবার (১৬ জুন) রাতে তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এ স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। এরপরই স্ট্যাটাসটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে মিজানুর রহমান আজহারী লেখেন, ‘এক সপ্তাহ হয়ে গেল। একজন তরুণ দ্বা’য়ী তার দুজন সফরসঙ্গী এবং ড্রাইভার সহ বিলকুল গায়েব। কী আজিব ঘটনা! এমনকি গাড়ীটারও সন্ধান কেউ দিতে পারছেনা। ব্যাপারটা বেশ রহস্যজনক এবং উদ্বেগের। তাদের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনাও যেন— ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে।’

‘গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম ও নৃশংসতম অপরাধগুলোর অন্যতম। গুম-সংস্কৃতি চূড়ান্তভাবে আইনের শাসনকে বিপন্ন করে তোলে এবং একটি রাষ্ট্রকে অকার্যকর অবস্থার দিকে নিয়ে যায়।’

‘গুমের মিছিল এভাবে লম্বা হতে থাকলে, আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো ক্ষুন্ন হবে। তাই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত— প্রতিটি গুমের ঘটনার দ্রুত এবং নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করা।’

‘মুসলিম রাষ্ট্রে একজন অমুসলিমেরও সামাজিক নিরাপত্তা রয়েছে। প্রাণ রক্ষা করা মাক্বাসিদে শারি’আর (শারি’আর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য) অন্যতম লক্ষ্য। একজন নিরপরাধ মানুষের প্রাণনাশ গোটা মানবমন্ডলীর প্রাণনাশের সমতুল্য। রাষ্ট্র তার জনগণের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে— তাদেরকে খুঁজে বের করা। আবু ত্বহা আদনান সালামাতে ফিরে আসুক। গুম এবং হয়রানির অবসান ঘটুক।’

উল্লেখ্য, আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনানের দাদা বাড়ি রাজশাহী শহরে। অনেক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র ছেলে ত্বহা ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে বাবার বাড়িতে ঠাঁই নেন আজেদা বেগম। ত্বহার ছোটবোন কারমাইকেল কলেজে অনার্সে পড়ালেখা করছেন। অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন ত্বহা। এক সময় রংপুরের ক্রিকেট অঙ্গনে সবার পরিচিত ছিলেন তিনি। রংপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে দর্শন বিষয়ে রংপুর কারমাইকেল কলেজে অনার্সে ভর্তি হন। মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। কারমাইকেলে পাড়াকালীন ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝুঁকে পড়েন এই ক্রিকেটার। কোনো আরবি শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা না করলেও ইসলাম ধর্মের প্রচুর বই পড়তেন এবং গবেষণা করতেন। ফলে অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন একজন ভালো ইসলামী বক্তা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মসজিদে ইসলামিক বিষয়াদি নিয়ে আলেচনা করতেন। বিয়ের পর ত্বহা তার স্ত্রী এবং দেড় বছর বয়সী ছেলে ও তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে শালবন মিস্ত্রীপাড়া চেয়ারম্যান গলিতে ভাড়াবাসায় থাকেন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত