‘রাষ্ট্রপতিকে চলে যেতে হবে, এ বিষয়ে সবাই নীতিগতভাবে একমত’

| আপডেট :  ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৮  | প্রকাশিত :  ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৮

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতিকে চলে যেতে হবে। এ বিষয়ে সবাই নীতিগতভাবে একমত। তবে চলে যাওয়া বা অপসারণের প্রক্রিয়া কী হবে সে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিকভাবে ঐকমত্যের দরকার আছে।

এ নিয়েই আলোচনা চলছে।’ গতকাল রবিবার ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘নীতিগতভাবে রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। কত দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। পুরো জাতি এক হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেন উপনীত হওয়া যায়, সেটি আমরা চাই।’

রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি, সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠন দুটোর নেতারা গত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করতে ছুটছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার বিকাল ৪টা থেকে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিকে আহ্বান জানাব জনগণের পাল্‌স বুঝুন। প্রেসিডেন্ট হাউজে যে গোখরা সাপ বসে আছে, তাকে বিদায় করতে সহযোগিতা করুন। গত তিনটি নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে ১২ দলীয় জোট একমত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি এই অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ আহসানুল হুদা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব প্রফেসর আব্দুল করিম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সমন্বয়ক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আদিব মমিন আরিফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুউদ প্রমুখ। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংগঠন দুটির প্রতিনিধিরা। এছাড়া গত তিন দিনে জামায়াতে ইসলাম এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। কারণ এই সরকারের ব্যর্থতা সমগ্র দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণত আনবে। এই সরকারের সাফল্য চাই। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চাই আমরা। গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে বিএনপিসহ যারা মাঠে ছিল, তাদের সবার মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠারও আহ্বান জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বিএনপি, ১২ দলীয় জোট, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা চাই সবাই একমত হয়ে একটি সিদ্ধান্ত যেন আসে। আমরা এ বিষয়ে জনমত তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সাংবিধানিক সংকট তৈরির পাঁয়তারা চলছে বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ইস্যুতে বিএনপির সাংগঠনিক বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা করব।

১২ দলীয় জোটের নেতারা জানান, গতকালের বৈঠকটি অনেকটাই অম্লমধুর ছিল। ছাত্রনেতারা যেসব বিষয়ে ঐকমত্য চাইছেন, এরমধ্যে অন্যতম রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি। আর এক্ষেত্রে ১২ দলীয় জোট জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতির প্রতি তাদের কোনো দুর্বলতা বা সহানুভূতি না থাকলেও এই মুহূর্তে তার অপসারণ সাংবিধানিক সংকটের কারণ হতে পারে। এর থেকে নানাবিধ সমস্যার উদ্রেক করতে পারে। বৈঠকে বর্তমান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্যের বিষয়ে জোটের নেতারা উল্লেখ করেন। জোট মনে করে, দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনি ট্রেনে ওঠা দরকার।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত