সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ নাকি পরকীয়ার জেরে বাবা-মা ও বোনকে হত্যা করেছে মেহজাবিন
রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকা থেকে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে তিনজের লাশ উদ্ধার করা হয়। বিষাক্ত কিছু খাইয়ে তাদের হত্যার অভিযোগে আটক করা হয়েছে ওই দম্পতির বড় মেয়ে মেহেজাবিন মুনকে। এ খবর নিশ্চিত করে কদমতলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবির হোসেন বলেন, শনিবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- মাসুদ রানা (৪৫), তার স্ত্রী জোসনা ওরফে মৌসুমী (৪০) এবং তাদের কন্যা সন্তান জান্নাত (১৮)। পুলিশের দাবি, একই সময় মেহেজাবিন তার একমাত্র কন্যাসন্তান মারজান তাবাসসুম ও স্বামী শফিকুল ইসলামকে (৩০) বিষাক্ত কিছু খাওয়ালেও তাদের মৃত্যু হয়নি। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শফিকুল ইসলাম জানান, তাদের বাসা কদমতলীর বাগানবাড়ি এলাকায়। গতকাল শুক্রবার (১৮ জুন) রাত ৯টার দিকে সপরিবারে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। রাতে তার স্ত্রী অনেক কিছু খেতে দেন। এরপরের ঘটনা সম্পর্কে উনি আর কিছুই জানেন না।
এছাড়া প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সম্পত্তি নিয়েও পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ছিল মেহজাবিনের। সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য বাবা-মাকে অনেক চাপ দিতেন তিনি। এ নিয়ে এর আগে বৈঠক শালিসও হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে। গুরুতর অসুস্থ অভিযুক্তের স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্য জানান, মেহজাবিন উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করছিলেন। পরিবারের সাথে নানা কলহে জড়াতেন। এমনকি স্বামী অরণ্যের সাথেও দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতেন। এসআই বলেন, নিহতের বড় মেয়ে মেহজাবিন সকালে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে জানান, তিনি তার মা, বাবা ও ছোট বোনকে হত্যা করেছেন। আপনারা আসেন। এসে আমাকে ধরে নিয়ে যান।
জানা যায়, গত দুদিন আগে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন মেহজাবিন। এসেই তার ছোট বোন জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর পরকীয়া রয়েছে বলে বাবা-মাকে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই হয়তো তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। পুলিশের ধারণা, মারজানের মা মেহেজাবিন মুন রাতের কোনো একটি সময় সবাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিষাক্ত কিছু খাওয়ান। তবে কী খেয়ে তারা অসুস্থ হয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহতদের ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত