মোস্তাফিজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল
মোস্তাফিজুর রহমান-রিশাদ হোসেন গতকাল আইপিএলের নিলামে উঠলেও আগ্রহ দেখায়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। শুধু তাঁরাই নন, দল পাননি নিলামে নাম তোলা বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারই।
গত দুই দিন ধরে জেদ্দায় বসেছিল আইপিএল মেগা নিলাম। আফগানিস্তানের ৬ ক্রিকেটার দল পেলেও টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে, বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের কেউ দল পাননি। পাকিস্তানিরা আইপিএলে ‘অপাঙেক্তয়’ থাকায় স্বাভাবিকভাবে নিবন্ধিতও হয়নি তাঁদের কারও নাম।
গত আইপিএলে বাংলাদেশিদের মধ্যে শুধু দল পেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। দিল্লি ক্যাপিটালস ছেড়ে তিনি যোগ দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সঙ্গে, চেন্নাই সুপার কিংসে। সাকিব আল হাসানের পর গত কয়েক বছরে মোস্তাফিজই হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের মুখ। গতবারের মতো এবারও তাঁর ভিত্তিমূল্য ছিল ২ কোটি রুপি। তবে নিলামের দ্বিতীয় দিনে নাম উঠলেও তাঁকে কেনেনি কেউ।
২০২৪ আইপিএলে শুরুতেই দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন ফিজ। শুরুতে ‘পার্পল ক্যাপ’ও দখলে রেখেছিলেন তিনি। ৯ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট। জাতীয় দলের ব্যস্ততা থাকায় গত আইপিএলের পুরোটা খেলতে পারেননি তিনি। এবারও নানা সূত্রে জানা যাচ্ছিল, বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার যদি আইপিএলের দল পান, সেটা মোস্তাফিজেরই পাওয়ার সুযোগ বেশি। গতবারের পারফরম্যান্স, চেন্নাইয়ের কন্ডিশন মিলিয়ে ফিজের প্রতি চেন্নাই আগ্রহী হতে পারে, এমন কোথাও শোনা যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত কোনো দলই পাননি ২৯ বছর বয়সী পেসার।
মোস্তাফিজের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চেন্নাই সুপার কিংস এবারও যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি একজন বাঁহাতি পেসার চেয়েছিল দলে ভেড়াতে। শেষ পর্যন্ত ফিজকে তাদের দলে না নেওয়ার কারণ, এনওসি বা অনাপত্তিপত্র জটিলতা। ফিজকে নিয়ে জটিলতা থাকায় পরে ইংলিশ বাঁহাতি পেসার স্যাম কারেনকে দলে ভিড়িয়েছে চেন্নাই।
এবার যেহেতু মেগা নিলাম ছিল, দলগুলো আগামী তিন বছরের জন্য প্রতিটি খেলোয়াড়ের কাছ থেকে তিন বছরের অনাপত্তিপত্র চেয়েছিল। চেন্নাইও এনওসি নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন মোস্তাফিজের কাছ থেকে। এ নিয়ে বাংলাদেশি পেসার যোগাযোগ করেছিলেন বিসিবির সঙ্গে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ড তাঁকে ১ বছরের বেশি এনওসি দিতে চায়নি।
সব ক্রিকেটার যেখানে তিন বছরের এনওসির নিশ্চয়তা পেয়েছে, সেখানে মোস্তাফিজকে নিয়ে জটিলতা থাকায় স্বাভাবিকভাবে তাঁর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে চেন্নাই। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডও বিসিবির মতো তাদের খেলোয়াড়দের আগে এনওসি দিতে নানা জটিলতা তৈরি করত। এবার তারাও নিজেদের ক্রিকেটারদের দিয়েছে। যারা আইপিএল নিলামে নাম তুলেছিল তাদের প্রত্যেককে তাদের বোর্ড ৩ বছর করে অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। আগের কয়েকটি আইপিএলের তুলনায় এবার তাই লঙ্কান ক্রিকেটারদের দল পাওয়ার সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
ক্রিকেটারদের এনওসি দেওয়া নিয়ে বিসিবি এর আগেও জটিলতা তৈরি করেছে। ২০১৬ আইপিএল ছাড়া মোস্তাফিজ কখনো পূর্ণাঙ্গ আইপিএল খেলতে পারেননি। সেবার তিনি হয়েছিলেন আইপিএলের উদীয়মান ক্রিকেটার। পরের প্রতিটি আইপিএলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা বিভিন্ন কারণে তাঁকে মাঝপথেই ছাড়তে হয়েছে আইপিএল। শুধু মোস্তাফিজ নন, দল পেয়েও এনওসি জটিলতায় আইপিএলে খেলতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স, স্কিল অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতি যা একটু আগ্রহ দেখালেও বিসিবির এনওসি জটিলতার কারণে তারা আরও পিছিয়ে যায়।
এবারের মেগা নিলামে স্বাভাবিকভাবেই সবচেয়ে বেশি ১২০ ক্রিকেটার বিক্রি হয়েছে ভারতের। ‘রিটেইন ছাড়া’ নিলামে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জন দল পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার। ১৩ জন অস্ট্রেলিয়ার, ইংল্যান্ডের ১১ জন। নিউজিল্যান্ডের ৭, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সমান ৬ ক্রিকেটার বিক্রি হয়েছেন। ৪ জন ওয়েস্ট ইন্ডিজের। নিলামের প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছেন ৭২ জন, দ্বিতীয় দিনে ১১০। অবিক্রীত থেকে গেছেন ৩৯৫ ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত