শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতি তদন্ত সরকারের ‘টপ প্রায়োরিটি’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতি তদন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাজগুলো শুরু হয়েছে। আরও বিস্তারিত কার্যক্রম জানতে পারবেন, এটা আমাদের টপ প্রায়োরিটি।’
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর বিকালে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিষয়ে কতটুকু তথ্য সরকার জানতে পেরেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি সামারি প্রতিবেদন গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের কাজগুলো শুরু হয়েছে। আরও বিস্তারিত কার্যক্রম আপনারা জানতে পারবেন। এটা আমাদের টপ প্রায়োরিটি।’
শেখ হাসিনা এখানে একটি চোরতন্ত্র জারি করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘সেই চোরতন্ত্রের কারা কারা এই মহাচুরিতে জড়িত ছিল, এটা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়। তাদের জানানোটা আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব। উনি কী পরিমাণ চুরি করেছেন, সামনে সেটি অবশ্যই আপনারা জানতে পারবেন। কী পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ থেকে চলে গেছে, তার একটা ধারণা কিন্তু শ্বেতপত্র দিয়েছে। ১৬ মিলিয়ন ডলার প্রতি বছর পাচার হয়েছে। এটা বাংলাদেশের মানুষের টাকা।’
তিনি বলেন, ‘আর ব্যাংকগুলো কীভাবে ডাকাতি হয়েছে আপনারা তো দেখেছেন। আমরা গুরুত্বের সঙ্গে এটা তদন্ত করছি। তার সময়ে যত ধরনের চুরি হয়েছে…। লুণ্ঠনতন্ত্র, চোরতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন..। ইতোমধ্যে একটা রিপোর্ট এসেছে, তার পিয়ন, যেটা আগে উনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন ৪০০ কোটি টাকা (অবৈধ উপার্জন করেছেন)। পরে আমরা দেখেছি সেখান ট্রানজেকশন হয়েছে ৬২৮ কোটি টাকা।’
শেখ হাসিনাকে কবে নাগাদ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে লিগ্যাল প্রসেস খুব জোরেশোরে শুরু করছি। আইনের শাসন মানতে হলে তাকে তার সময়টা দিতে হবে। চাইলেও অনেক কিছু খুব দ্রুত আপনি করতে পারবেন না। বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনি ব্যবস্থার মধ্যে যতটা দ্রুত সম্ভব, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমরা বারবার বলছি শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন চাই। সেই অনুযায়ী পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আশা করবো যত দ্রুত সম্ভব তার প্রত্যাবর্তন হবে। শেখ হাসিনা বিচারের মুখোমুখি হবেন।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার অপরাধগুলো ভয়াবহ। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে যে ধরনের অপরাধ হয়েছে, এটা তো চিন্তা করা যায় না। পুরো পৃথিবী হঠাৎ করে ঘুম থেকে উঠে দেখছে, তার ক্রাইমটা কী ছিল। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার লোক গুমের শিকার হয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন কয়েক হাজার লোক। জুলাই-আগস্টে মারা গেছেন প্রায় ১৫০০ জনের মতো। কত ভয়ানক একটা বিষয়! মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, এটা আঁতকে ওঠার মতো।’
সম্প্রতি ফেসবুকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি পোস্টকে ঘিরে আলোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, সেটি একদমই উনার ব্যক্তিগত মতামত। পরে কিন্তু তিনি সেটি মুছে ফেলে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে তার জবাব পাওয়া যাবে। এটা নিয়ে ভারত তার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ভারত একটা স্বাধীন দেশ। আমরা বলছি এটা মাহফুজের ব্যক্তিগত মতামত।’
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত