নাম জেনে জেনে চারিয়েছে গুলি, কাশ্মীরের জঙ্গি হামলায় মৃত বেড়ে ২৭

আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মৃতের সংখ্যা না জেনে গেলেও বিকেল অবধি খবর ছিল নিহত একজন। তবে সন্ধে বাড়তেই বিভিন্ন সূত্রের খবর সেই সংখ্যা আর বেশি হয়ে থাকতে পারে। সূত্রের খবর অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বাকিরা পর্যটক। ওই সময় ওই স্থানে প্রায় ৩০০-৪০০ লোক উপস্থিত ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কারও কারও থেকে পাওয়া খবর অনুসারে দুপুর বেলা পর্যটক ভর্তি পহেলগাঁওতে হামলার ছক কষা হয়েছিল অনেক দিন ধরেই। ৬-৭ জন জঙ্গি একসঙ্গে হামলা চালায়। দুপুর ২টো ৩০ মিনিটে প্রথম হামলা হয়ে থাকতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জঙ্গিরা এসে প্রথমে পর্যটকদের নাম এবং পরিচয় জানতে চান। এমনকি আধার কার্ড দেখতে চায়। তারপরে পরিচয় নিশ্চিত করেই তাঁদের ওপরে গুলি চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। সূত্রের খবর এই জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে তারপরেই এই হামলার ছক কষে।
ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জঙ্গিরা আগে থেকেই রেইকি করেছিল এই জায়গার। ক্রমাগত রেইকি করার সময় পুলিশের পোশাক পরেও রেইকি করে জঙ্গিরা। তাঁরাই সংগঠনের বাকিদের খবর দেয়। গোয়েন্দা সূত্রে খবর রেইকি চলে বেশ কিছু হোটেলেও। পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সদস্যরা এসেছিল ভারতে। তারপরেই করা হয় হামলার প্ল্যান। টার্গেট করে করে পর্যটকদের ওপরে গুলি চালানো হয়। হামলার চালানোর পরেই পিছনের দিকে জঙ্গলে পালিয়ে যায় আতঙ্কবাদীরা। জঙ্গিদের উদ্দেশ্যে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। আগামীকাল কাশ্মীরে এনআইএ-এর স্পেশাল দল কাশ্মীর পৌছতে পারে বলে খবর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁর পৌছোনোর কথা। এরপরেই তিনি পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসবেন।
জানা যাচ্ছে, হামলাকারীরা যে ভাষায় কথা বলছিল তাও স্থানীয় কাশ্মীরি ভাষা নয়। আশঙ্কা জঙ্গলের মধ্যেই ঘাপটি মেরেছিল জঙ্গিরা। পর্যটকদের ভিড় বাড়তেই বেরিয়ে আসে তাঁরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে পর্যটকদের নিজের এবং পরিবারের জন্য সাহায্য চাইতেও দেখা যায়।
জানা যায় যে, জায়গায় হামলা চালানো হয়েছিল সেখানে কোনও গাড়ি পৌছায় না। রাস্তা ভাল না। পহেলগাঁও থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার উঁচুতে অবস্থিত বৈসরণ ভ্যালি। মিনি সুইজারল্যান্ড নামেও পরিচিত। একপাশে রয়েছে ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গলেই লুকিয়ে ছিল জঙ্গিরা। হামলাকারীদের হাতে একে-৪৭ -এর মতো কোনও অস্ত্র ছিল। প্রায় ৫০-৬০ রাউন্ড গুলি চালায় তাঁরা। প্রায় ৫-১০ মিনিট গুলি চলে থাকতে পারে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, অনেকেই পর্যটকদের নিয়ে গিয়ে বৈসরণ ভ্যালির নিচে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎই কিছু পর্যটকদের আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ছুটে আসতে দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন তাঁরা গুলির শব্দ শুনেছেন। এরপরেই নিচে গাড়ি ঘুরিয়ে ওই স্থান ছাড়তে শুরু করেন অনেকেই।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত