আবারও নিষিদ্ধ তাওহীদ হৃদয়, যা বলছে বিসিবি

| আপডেট :  ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৫  | প্রকাশিত :  ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৫

গত ১২ এপ্রিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) ম্যাচ চলাকালে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। এরপর তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের তরফে আপিলও করা হয়েছিল। পরে নাটকীয়ভাবে ডানহাতি এই ব্যাটারের শাস্তির মেয়াদ এক ম্যাচ কমানোও হয়। যে কারণে সুপার লিগের প্রথম ম্যাচের পরেই মোহামেডানের হয়ে ফের মাঠে নামেন ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটার।

তবে হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা কমানোর প্রক্রিয়া নিয়ে ওঠে সমালোচনার ঝড়। জাতীয় দলের এই ব্যাটারকে প্রিমিয়ার লিগে খেলাতে টুর্নামেন্টের মাঝপথে বদলে যায় ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের (সিসিডিএম) কোড অব কন্টাক্ট। সেদিন সুপার লিগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন হৃদয়। সেই সঙ্গে অধিনায়কত্বেও ফিরেন। এরপর সেই ইস্যু নিয়ে জল গড়িয়েছে অনেক দূর। নতুন করে সেই এক ম্যাচের শাস্তি পুনঃবহাল হচ্ছে হৃদয়ের।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মিরপুর শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএমের নতুন কনভেইনর নাজমুল আবেদিন ফাহিম। তার দেওয়া ভাষ্যমতে, আগামী ২৬ এপ্রিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের মধ্যকার সুপার লিগের চতুর্থ ম্যাচে হৃদয় খেলতে পারবেন না।

নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা প্রক্রিয়ার কিছুটা বাইরে চলে গিয়েছিলাম। অভ্যন্তরীণভাবে বাইলজ বদল করে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেটা নেওয়ার এখতিয়ার এখানে এই কমিটির নেই। আমাদের যেটা করতে হবে আগের যে নিয়ম কানুন ছিল সেটা অনুসরণ করতে হবে।’

হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আগের একটা ঘটনার কারণে যাকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, কিন্তু তাকে এক ম্যাচ পরই খেলতে দেওয়া হয়। আমরা তো সেটা ফিরিয়ে আনতে পারব না। আমরা সেটা (অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে হৃদয়ের খেলা) বৈধ ধরে নিচ্ছি। এখন আমরা আগের নিয়মকে বলবৎ করব। সেই অনুযায়ী পরবর্তী ম্যাচে (গাজী গ্রুপের বিপক্ষে) তাওহীদ হৃদয় খেলার সুযোগ পাবে না।’

এর আগে ১২ এপ্রিল মিরপুরে ডিপিএলে রাউন্ড রবিন লীগের শেষ ম্যাচে আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয়কে। তার নামের পাশে যোগ হয় ৪টি ডিমেরিট পয়েন্ট, সঙ্গে করা হয় ৮০ হাজার টাকা জরিমানা। একই ঘটনায় মোহামেডানের পেসার ইবাদত হোসেনকেও জরিমানা করা হয় ৪০ হাজার টাকা। এই শাস্তি পাওয়ার পরও হৃদয় সংবাদমাধ্যমে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন।

ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমকে হৃদয় বলেন, ‘ঘটনা যদি অন্যদিকে যায়, আমি মুখ খুলব ইনশা আল্লাহ।’ তার এমন মন্তব্যের পর শাস্তি বাড়িয়ে তাকে দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও ডিমেরিট পয়েন্টের জন্য হৃদয়কে প্রথমেই দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করতে পারতেন ম্যাচ রেফারি, যেটি না করে তাকে একরকম ছাড়ই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাও মানেনি মোহামেডান ও হৃদয়। ১৭ এপ্রিল মিরপুরে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচটিতে হৃদয় না খেললেও ২০ এপ্রিল বিকেএসপিতে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে খেলেন।

অথচ নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ওই ম্যাচেও তার মাঠের বাইরে থাকার কথা ছিল। হৃদয়ের শাস্তি কমানোর জন্য মোহামেডান সিসিডিএমে আবেদন করেছিল। কিন্তু টেকনিক্যাল কমিটি আবেদনে সাড়া না দিলে মোহামেডানের চাপে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটিই বাধ্য হয়ে হৃদয়ের শাস্তি কমায়। প্রক্রিয়াটি ছিল পুরোপুরি নিয়মবহির্ভূত কারণ, শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ারই নেই বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগের। তাই নতুন করে ফের এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেতে যাচ্ছেন জাতীয় দলের এই ব্যাটার।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত