মির্জাগঞ্জে ডাকাত দেখে অসুস্থ গৃহকর্তা, সুস্থ করে টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট

| আপডেট :  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮  | প্রকাশিত :  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪৮

সাকিব হোসেন পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ডাকাত দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক ব্যবসায়ী, পরে তাকে সুস্থ করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যান ডাকাতরা, এমন এক ঘটনা ঘটে আমরাগাছিয়া ইউনিয়নের আমরাগাছিয়া গ্রামে।

প্রতিদিনের মতো রাতের খাবার সেরে ঘুমিয়ে পরেছিলেন ওষুধ ব্যবসায়ী সোবাহান হাওলাদার (৬০)। রাত দুইটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙ্গে একদল ডাকাত ঘরে প্রবেশ করলে তিনি গৃহকর্তা সোবাহান হাওলদার অসুস্থ হয়ে পরেন। এ সময় ডাকাতরা তাকে পানি খেতে দিয়ে তার সেবাযত্ন করেন। পরে নিজেদের ডাকাত পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা মুল্যবান কাপড়-চোপড় লুট করে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামে।

একই সময়ে একই বাড়ির সোবাহান হাওলাদারের ভাতিজা অন্য একটি আধা-পাকা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ডাকাতদল ঘরে প্রবেশ করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে সদর্পে পালিয়ে যায়। তবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন ডাক-চিৎকার না করায় ডাকাতরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুইঘর থেকে সাড়ে তিনভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৩৮ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে ডাকাতদল।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত দুইটার দিকে আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের হাওলাদার বাড়ির সোবাহান হাওলাদার ও স্কুল শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম লায়েসের ঘরের দরজা ভেঙে একদল ডাকাত ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে ঘরের সবাইকে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও অন্যান্য মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। জহিরুল ইসলাম লায়েস ঝাটিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং চাচা মো. সোবাহান হাওলাদার সুবিদখালী বাজারে ওষুধের ব্যবসা করেন।

ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক জহিরুল ইসলাম লায়েস বলেন, রাত দুইটার দিকে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছিলো, প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে মুখোষপরা একদল ডাকাত ঘরের দরজা ভেঙে কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। তারা নিজেদের ডাকাত পরিচয় দেয় এবং ঘরের সকল আসবাবপত্র তছনছ করে নগদ আঠারো হাজার টাকা ও আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার এবং অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

একই বাড়ির স্কুল শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলামের চাচা সোবাহান হাওলাদার বলেন, তার পাকা দালানের দরজার সিটকারি (লক) ভেঙে ঘরে ঢুকে ডাকাত দল। তারা নিজেদের ডাকাত পরিচয় দিলে আমি ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এ সময় ডাকাতরা আমাকে পানি খেতে দেয়। পরে একাধিক আলমারি ভেঙে ১ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, নগদ দশ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে চলে যায়। তিনি আরো বলেন, ডাকাত দল ঘরে ঢোকার পর প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করে।

সোবাহান হাওলাদার আরো বলেন, তিনি এবং তার স্ত্রী এ সময় ঘরে ছিলেন, কতজন ডাকাত ঘরের বাইরে ছিলেন আমরা জানি না, তবে আমার কক্ষে তিনজন ঢুকে ছিল। তারা আমাদের কোন আঘাত করেনি বরং আমি ভয়ে অসুস্থ হয়ে পরলে ডাকাতরা আমার সেবা যত্ন করেন।

মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত