মহামারি প্রতিরোধের আমল

| আপডেট :  ০২ জুলাই ২০২১, ০৭:০৯  | প্রকাশিত :  ০২ জুলাই ২০২১, ০৭:০৯

করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জা, স্কুল ও দর্শণীয় স্থান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনা জাতির মধ্যে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়বে তখন তাদের মধ্যে এমন এমন নতুন রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে; যা ইতিপূর্বে কখনো দেখা যায়নি। (ইবনে মাজাহ)

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও আক্রমণ এখনো থামেনি। নতুন নতুন লক্ষণ ও ধরণ নিয়ে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। কোথাও একই লক্ষণ আবার কোনো কোনো অঞ্চলে ভিন্ন লক্ষণ নিয়ে এর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রাণঘাতী মহামারি কোভিড-১৯ ভাইরাসটির হাতের তালুতে ভাসছে প্রায় পুরো পৃথিবী।

বিশ্বের প্রায় ১৩২টি দেশ ও অঞ্চলে হানা দিয়েছে করোনা। মহামারি করোনার প্রতিরোধ ও প্রতিকারে যখন পুরো বিশ্ব চিন্তিত ও পেরেশান; তখনও ইসলামে রয়েছে এ মহামারির প্রতিরোধ-প্রতিকার তথা সর্বোত্তম চিকিৎসা। করোনা মাহামারি মুসিবতের আকৃতিতে আমাদের জন্য আল্লাহর মহাপরীক্ষা পাশাপাশি নিজেকে শুধরানোর বিশেষ সুযোগ। চলছে লকডাউন। এ সময় অন্যান্য ব্যস্ততা না থাকায় চাইলে আমরা পুরো সময় আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়ে দিতে পারি। এতে আখেরাতের কল্যাণ যেমন মিলবে, তেমনি ব্যাপকভাবে আত্মশুদ্ধি ও আত্মোন্নয়ন সম্ভব হবে।

মাহামারির আমলগুলো-

১. সালাতুল হাজাত আদায় করা : রাসূল (সা.)-এর নির্দেশনা অনুসরণে রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে সালাতুল হাজাত আদায় করা। এটি অত্যন্ত উপকারী ও পরীক্ষিত আমল।

২. ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়ার হামনি।’ অর্থ : হে আল্লাহ, আমাকে মাফ করে দিন এবং আমার ওপর অনুগ্রহ করুন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯৪)। বেশি করে এই দোয়া পড়া।

৩. আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি, ওয়াল জুনুনি, ওয়াল জুযামি, ওয়ামিন সাইয়্যিইল আসকাম। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই শ্বেত, উন্মাদনা, কুষ্ঠ এবং সব দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৫৪)। যথাসম্ভব এ দোয়া পড়া।

৪. ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুয়াস সামিউল আলিম।’ অর্থ : আল্লাহর নামে, যার নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সবকিছু শোনেন এবং সবকিছু জানেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, এ দোয়া সকালে পাঠ করলে সারা দিন নিরাপদে থাকবে আর বিকালে পাঠ করলে সারা রাত্রি নিরাপদে থাকবে। (আবু দাউদ হাদিস : ৫০৮৬)।

৫. সকাল-বিকাল সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে নিজের শরীরে ও শিশুদের শরীরে দম করবে।

৬. আয়াতুল কুরসি পাঠ করা : রাসূল (সা.) সব বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সাহাবায়ে কেরামকে আয়াতুল কুরসি তিলাওয়াত করার তাগিদ দিয়েছেন। এটি পাঠ করে নিজের শরীরে ও শিশুদের শরীরে দম করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম।

৭. সকাল-বিকাল সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করা। সূরা ফাতিহার অন্য নাম দোয়ার সূরা ও শিফার সূরা।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, সব সময় আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি উল্লেখিত হাদিসের আমল, তাসবিহ ও দোয়াগুলোর মাধ্যমে মহামারি করোনা থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি দোয়া করা। হতাশাগ্রস্তরা বিপথগামী। আসুন মানবতার এ ক্রান্তিলগ্নে স্বাস্থ্য কর্মীদের পরামর্শ ও সরকারি নির্দেশনা পালনের পাশাপাশি বেশি বেশি তাওবা-ইস্তেগফারের আমল করি। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে করোনা নামক এ মহামারি ভাইরাস থেকে হেফাজত করুন! আমিন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত