পেটের দায়ে লকডাউনেও ইট ভাঙ্গার কাজ, বৃদ্ধাকে ওসির সহায়তা

| আপডেট :  ০৬ জুলাই ২০২১, ০১:১১  | প্রকাশিত :  ০৬ জুলাই ২০২১, ০১:১১

বরিশালের গৌরনদীতে বিধবা মরিয়ম বেগম ৭০ বছরের বৃদ্ধা। তারপরও পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে কঠোর লকডাউনেও ঘর থেকে বের হচ্ছেন এবং ইটভাঙ্গার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বয়সের ভারে ইট ভাঙ্গার কাজটিও তেমন ভাবে করতে না পারলেও, এ কাজ করে যে টাকা রোজগার করছেন তা দিয়ে কোনোভাবে তার অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটছে।

এমন কষ্টের জীবনের কথা জানতে পেরে খোদ গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বৃদ্ধার পাশে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ওসি আফজাল হোসেনের মানবিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বাউরগাতি গ্রামের মৃত হালান সরকারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৭০) ছিলেন সচ্ছল পরিবারের একজন গৃহিণী। চার কন্যা ও স্বামীকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তার দিনকাল।

মরিয়ম বেগম জানান, স্বামী থাকা অবস্থায় চার কন্যার বিয়ে দেন। পরবর্তীতে স্বামীর রোজগার দিয়ে দুজনের খেয়ে পরে ভালই ছিলেন। কিন্তু বিধিবাম স্বামীর মৃত্যুতে মুহূর্তেই তার সুখের সংসার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। ৫ বছর আগে স্বামী হালান সরকার মারা যান। মেয়েদের তেমন সচ্ছল পরিবারে বিয়ে হয়নি। তারা নিজেদের সংসার নিয়েই টানাটানিতে আছে। তাকে দেখার সুযোগ নেই। স্বামীর মৃত্যুর পরে জীবন বাঁচানোর জন্য নিজেকেই জীবন সংগ্রামে নামতে হয়েছে।

মরিয়ম বেগম বলেন, মোর মাইয়ারা নিজেরাই পোলাপান নিয়া চলতে পারে না। মোরে কি কইররা খাওয়াইবে। হেইয়ার লাইগ্যা নিজের জীবন বাঁচানোর লাইগ্যা নিজেই কামে নামছি। গত ৫ বছর ধরে রাস্তার পাশে ইট ভাইঙ্গা যা পাই হেইয়া দিয়া খাইয়া পইররা কোনো রকম আছি।

দৈনিক কত টাকা আয় হয় জানতে চাইলে মরিয়ম বলেন, সারা দিন ইট ভাঙলে ৫০/৬০ টাকা পাই। শরীর ভাল না থাকলে কাম কম করলে ৩০/৪০ টাকা কামাই করি। এতে কি সংসার চলে জানতে চাইলে বলেন, আল্লা চালান।

বার্থী গ্রামের শাহআলম খান ও আকবর গোমস্তা জানান, মরিয়ম বেগম বাউরগাতি গ্রাম থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে ইট ভাঙ্গার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সারা দিন কাজ করে যা পান তাই দিয়ে সংসার চালান। মহামারি করোনার লকডাউনে কাজ বন্ধ তার পরেও বৃদ্ধা মরিয়ম প্রতি দিনই রাস্তার পাশে কর্মস্থলে এসে বসে থাকেন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত