পটুয়াখালীতে হঠাৎ সংকট দেখা দিয়েছে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের
ইমরান হোসেন,পটুয়াখালী থেকে: পটুয়াখালীতে আট উপজেলায় দিন দিন করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সংক্রমণের হার ৪০ দশমিক ৪২ ভাগ। এমন পরিস্তিতে হাসপাতাল গুলোতে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ, সেই সাথে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা।
এতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর চাহিদা অনুযায়ী নাপা, নাপা এক্সট্রা, নাপা এক্সটেন্ড, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপসহ প্যারাসিটামল এই জাতীয় ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে জেলার ফার্মেসীগুলোতে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় চারিদিকে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও যখন বাড়ছে তখন চাহিদা অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় এই ওষুধ গুলোর সরবরাহ না থাকায় ভোগান্তিতে পরেছে মানুষ।
মাদার বুনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সবুজ মিয়া জানায়, আমার রোগী হাসপাতালে ভার্তি আছে। গত কাল রবিবার (১১জুলাই)
সকালে জ্বরের ঔষধ ‘নাপা’র জন্য হাসপাতালের সামনের ফার্মেসীতে যাই। ৫টি ফার্মেসি ঘুরে তারপরে ওষুধ পেয়েছি। তাও আবার দাম বেশি রেখেছে।
গলাচিপা উপজেলার বাসিন্দা আসমা বেগম বলেন, আমার ১০ বছরের ছেলে মোঃ আরিফ হোসেনের টাইফয়েড হয়েছে। তাকে নিয়ে সকালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি পটুয়াখালীতে। ডাক্তার যে ওষুধ দিয়েছে বেশ কয়েকটি ফার্মেসি ঘুরেও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সব ওষুধ পাইনি। বিশেষ করে জ্বরের জন্য নাপা খুঁজে পাননি তিনি।
জ্বরের ওষুধ খুঁজতে ছিলেন স্কুল শিক্ষক আবদুর রহমান। তিনি জানান, কলেজ রোড এলাকা থেকে ওষুধ খুঁজতে খুঁজতে সদর
রোডে এসেছি এরপরে এক পাতা নাপা ওষুধ সংগ্রহ করেছি তবুও বেশিদামে।
পটুয়াখালী পৌরশহরের নিউমার্কেট ‘মায়ের দোয়া মেডিকেল হল’ (ফার্মেসিতে) এর মালিক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘জ্বরের ওষুধ এইস, এইস প্লাস, এইচ এক্স আর ট্যাবলেট, ফাস্ট, ফাস্ট এক্স আর ওষুধেরও সঙ্কট আছে। কোম্পানি যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। গত কয়েকদিন ধরে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই কোম্পানি গুলোতে ওষুধের জন্য ওয়ার্ডার দেয়া দিচ্ছি। আমি আজকে দুই বস্ক ওষুধ পেয়েছি। তা সকালেই বিক্রি হয়ে গেছে। তবে সরবরাহ না থাকায় আমাদেরও কিছু করার থাকছে না।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে জামাল জামাল ফার্মেসির মালিক জানায়, হঠাৎ করে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে জ্বরের ওষুধের চাহিদা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। এতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সময় নাপা ও এইস ট্যাবলেট ও সিরাপের সরবরাহ না থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
পটুয়াখালী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বিষটা আমি শুনেছি কি ঔষধ সংকট হওয়ার কোন কারণ দেখছি না। এবিষয় তদন্ত্র করে দেখব।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ জাহাংঙ্গীর আলম শিপন বলেন, আমাদের সরকারি ওষুধের কোন সংকট নেই। যদি ফার্মেসীতে সংকট দেখা দেয় এবিষয় ড্রাগ সুপারের সাথে কথা বলেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, কোন ফার্মেসীতে এই ঔষধ গুলোর কৃত্রিম সংকট তৈরী করলে এবং বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত