ঘাটে ভিড়লেই লাফিয়ে উঠছেন যাত্রীরা, ফেরি ছাড়তে বাধ্য কর্তপক্ষ
অতিমাত্রায় করোনা বিস্তার রোধে মাদারীপুরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে আজ (শনিবার) ভোররাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচলও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু জরুরি পরিবহন নিয়ে চলাচলকারী ফেরি ঘাটে ভিড়লেই অপেক্ষমাণ যাত্রীরা লাফালাফি করে ফেরিতে উঠা শুরু করছেন। তবে দিনভর লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি সেবামূলক ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারে ফেরি চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
তবে ঘাটে অপেক্ষমাণ যাত্রীর চাপের কারণে এ সীমিত আকারে ফেরিও চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরি ঘাটে ভিড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে ফেরিতে উঠার প্রতিযোগিতা শুরু করেন। যে কারণে লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে তোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান ঘাট কর্তৃপক্ষ।
ঈদকে সামনে রেখে শুক্রবার সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে এ রুটের ফেরিগুলোতে। উপেক্ষিত হয় স্বাস্থ্যবিধি। করোনা বিস্তার রোধে শনিবার ভোররাত থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি সেবামূলক ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারে ফেরি চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে লকডাউনের সময় এ রুটে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ রাখা হলেও গত ৩ মে আইন আমান্য করে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাবাজার ঘাটের ট্রলার ও স্পিডবোট বন্ধ রাখতে এগুলোর ইঞ্জিনের পাখা খুলে নেয় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ।
বরগুনা থেকে বাংলাবাজার ঘাটে আসা যাত্রী মোমেনা বেগম জানান, সেহরি খেয়ে রওনা দিয়েছি। প্রায় ২ হাজার টাকা ব্যয় করে বাংলাবাজার ঘাটে এসে পৌঁছেছি। এসে দেখি ফেরি চলাচল বন্ধ। আমার সঙ্গে ৪টি ব্যাগ নিয়ে একাই ঢাকা যাব। ছেলেরা সবাই ঢাকায় থাকে। গত এক মাস ধরে বরগুনা গিয়ে আটকা পড়েছিলাম। আজকে এসে দেখি ঘাটে ফেরি বন্ধ। আমার এখন গ্রামের বাড়ি বরগুনাতেও ফিরে যাওয়া সম্ভব না। কখন ওপার যেতে পারব তাও জানি না।
ঢাকাগামী যাত্রী মোহাম্মদ আলী জানান, রোগীবাহী ১০টি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ক্যামেলিয়া ফেরিটি শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে। ৫ মিনিটের মধ্যে প্রায় ১ হাজার যাত্রী উঠে গেছে ফেরিটিতে। তবে ভাগ্য ভালো পুলিশি পাহারায় আগে অ্যাম্বুলেন্স উঠানোর ব্যবস্থা করে। না হলে মানুষের কারণে ফেরিতে কোনো অ্যাম্বুলেন্সও উঠানো যেত না।
শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন জানান, লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি সেবামূলক ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপার করতে ফেরিতে উঠানো কষ্টসাধ্য হচ্ছে। কারণ ফেরি ঘাটে ভিড়লে সাধারণ যাত্রীরা ফেরিতে লাফিয়ে উঠে পড়ছেন।
ঘাটে দায়িত্ব পালন করা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুল হাসান বলেন, ঘাটে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ী ও জরুরী সেবামূলক পরিবহন পরিক্ষা করে আমরা ফেরিতে উঠানোর ব্যবস্থা করছি। তবে ঘাটে যাত্রী চাপ বেশি যে কারণে ফেরিতে সাধারণ যাত্রীরা উঠে যাচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ম্যানেজার (মেরিন) আহম্মদ আলী জানান, লকডাউনের জন্য এ রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তবে লাশ, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি সেবামূলক ও পণ্যবাহী পরিবহন পারাপারে ফেরি চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। রাতে পণ্যবাহী ফেরি চলাচল করবে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত