হাসপাতালের টেবিলে কুকুরে ঘুমের ছবি ভাইরাল, ফার্মাসিস্ট ও নৈশ প্রহরীকে কারণ দর্শানো নোটিশ

| আপডেট :  ১০ আগস্ট ২০২১, ০৬:৫৭  | প্রকাশিত :  ১০ আগস্ট ২০২১, ০৬:৫৭

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ থেকে: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের টেবিলের ওপর কুকুর শুয়ে থাকার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ছবিটি ভাইরাল হবার পর জরুরি বিভাগে ডাক্তার-নার্স না থাকা এবং ওই রুমে কুকুর থাকার নিন্দা জানিয়ে দায়িত্বে অবহেলার কারণে কর্মকর্তাদের বিচার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত বৈদ্য। সঠিক জবাব না পেলে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

গত রবিবার (৮ আগস্ট) রাত ১১টায় সুমন শেখ নামের এক যুবক কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলেন।

জানাগেছে, রবিবার (৮ আগস্ট) রাত ১১টায় অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান সুমন শেখ (৩৫) নামের এক যুবক। এসময় জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখেন ডাক্তার, নার্স বা কর্তব্যরত কোনো ব্যক্তি রুমে নেই। কিন্তু ডাক্তারের টেবিলের ওপর একটি কুকুর শুয়ে রয়েছে।

তাৎক্ষনিক ভাবে এই দৃশ্য মোবাইল ফোন দিয়ে ছবিটি তুলে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের নিজ আইডি থেকে পোস্ট করেন। মূহুর্তের মধ্যেই ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিটিতে দেখা যায়, ডাক্তারের টেবিলের ওপরে উঠে একটি কুকুর ঘুমিয়ে আছে।

ওই সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রাজিয়া সুলতানা লোপা, ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু ঘটনার সময় জরুরি বিভাগে তারা কেউই উপস্থিত ছিলেন না।

ছবিটি ভাইরাল হবার পর থকে হাসতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তার-নার্স না থাকা এবং ওই রুমে কুকুর থাকার নিন্দা জানান স্থানীয়রা। একই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার কারনে বিচার দাবি করেছেন তারা।

সুমন শেখ বলেন, ডাক্তারের টেবিলে কুকুর দেখে অনেক ডাকাডাকি পরে ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ এসে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তরকে ডেকে আনেন। এরপর ডাক্তার রাজিয়া সুলতানা লোপা আমার শাশুড়ির চিকিৎসা করেন। আমি দায়িত্বে অবহেলাকারীদের শাস্তি দাবি করছি।

মাহবুব দীপু নামে একজন লিখেন, ইমার্জেন্সি রোগীর সেবা কক্ষের যদি এমন দশা হয়, ওয়ার্ড আর ভিতরের চিত্র আরো কতো ভয়ানক হতে পারে। আন্দাজ করতে পারছেন।

নূর আহমেদ নামের একজন লিখেন, বুঝে শুনে লিখূন। ডাক্তারদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচড়ন করবেন না, গুজব রটাবেন না। কুকুরটি এমার্জেন্সিতে জরুরী সেবা নিচ্ছে।

ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস বলেন, আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট পদে চাকরি করলেও জনবল কম থাকার কারণে আমাকে জরুরি বিভাগে ডিউটি করতে হয়। ওই রাতে অল্প সময়ের জন্য আমি ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখ জরুরি বিভাগের পাশে ১০২ নম্বর রুমে গিয়ে ছিলাম।

হাসপাতালে ডাক্তার রাজিয়া সুলতানা লোপা বলেন, জরুরি বিভাগ দেখার দায়িত্ব ফার্মাসিস্ট ও নৈশ প্রহরীর। রোগী আসলে ফার্মাসিস্ট ও নৈশ প্রহরীরা আমাদের ডেকে নেয়। টেবিলের ওপরে কুকুর উঠে ঘুমানোর বিষয়টি আমি দেখেনি।

কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত বৈদ্য বলেন, এ ঘটনায় ফার্মাসিস্ট দিপক বিশ্বাস ও নৈশ প্রহরী হালিম শেখকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছে। সঠিক জবাব না পেলে দায়িত্বে অবহেলার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত