টিকা সম্পন্নকারীদের যে সুবিধা দিল মালয়েশিয়া
মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে টিকা সম্পন্নকারীদের চলাচলে শিথিলতা আনল মালয়েশিয়া। রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা সংক্রমণে জীবন-জীবিকার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের জীবন-জীবিকার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে যা যা করা দরকার সরকার তাই করছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণরোধে দুই ডোজ টিকা গ্রহণকারী নাগরিকদের রেস্তোরায় বসে খাওয়ার অনুমতি এবং আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য চলাচলে শিথিল করা হয়েছে।
এ ছাড়া মসজিদে নামাজ আদায় সহ সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শারীরিক ব্যায়াম এবং খেলাধুলার অনুমতি থাকবে ।
প্রধানমন্ত্রী আরোও বলেন, ন্যাশনাল রিকভারি প্ল্যানের দ্বিতীয় ধাপের রাজ্যগুলোতে যে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, দূরপাল্লার বিবাহিত দম্পতিরা, যারা সম্পূর্ণরূপে টিকাপ্রাপ্ত, তারা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আন্তঃজেলা এবং আন্তঃরাজ্য ভ্রমণ করতে পারবেন এবং যে সব পিতামাতাকে টিকা দেওয়া হয়েছে, তারা তাদের ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে জেলা ও রাজ্যগুলো অতিক্রম করতে পারবেন।
এদিকে দেশটির কুয়ালালামপুর, সেলাংগর, নেগরি সেমবিলান, কেদাহ, জোহর, মালাক্কা এবং পুত্রজায়া ব্যতিত বাকি সব রাজ্যকে ন্যাশনাল রিকভারি প্লানের দ্বিতীয় ধাপের লকডাউনের আওতায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা সিনোভ্যাক, ফাইজার, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়ার ১৪ দিন পর এই শিথিলতা প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে জনসন অ্যান্ড জনসন বা ক্যানসিনো ভ্যাকসিন নেওয়ার ২৮ দিন পরে লোকজন এর আওতায় আসবে এবং এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে প্রবেশের সময় অবশ্যই তাদের ডিজিটাল কোভিড-১৯ টিকাকরণের সার্টিফিকেট এনফোর্সমেন্ট অফিসারদের দেখাতে হবে।
জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য জাতীয় নিরাপত্তার বিশেষ কমিটি সার্বক্ষণিক কাজ করছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন জেকেজেএভি বিশেষ কমিটিকে বলা হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখার।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছরের শেষ নাগাদ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরবে। অর্থনৈতিক খাতে নিষেধাজ্ঞা আরো শিথিল করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে এবং শীঘ্রই একটি ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
এদিকে দেশটির বৃহত্তর ক্লাং ভ্যাউপত্যকায় ভ্যাকসিন প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে পুরো দেশের মানুষকে এর আওতায় আনা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশটিতে করোনা রোধে এ পর্যন্ত পুরো দেশ জুড়ে ২ কোটি ৪০ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮৮ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ডোজের ৬৪.৪ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়া সম্পন্ন করেছেন ৩৬.৩ শতাংশ মানুষ।
এদিকে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় কেড়ে নিয়েছে ৩৬০ জনের প্রাণ। এ পর্যন্ত করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজার ৭৪৭ জন।
একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬৮৮ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ৬২ হাজার ৫৪০ জন। এবং ১০ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত