ঈদে বাড়ি যাওয়াটা কষ্ট, তবুও যাই মায়ার টানে!
পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সারা বছর ধরে অপেক্ষায় থাকতে হয় আমাদের। সেই ঈদের আনন্দটা কী বাবা-মায়ের সঙ্গে করতে পারবো না? এটা কি হয়! যেকোনো মূল্যে যেতে হবে মায়ের কাছে আর যেতে না পারলে সারা বছরের যে ক্লান্তির ঘাম তা শুকাবার নয়। প্রতি বছর কোনো না কোনো কারণেই পাটুরিয়া ঘাটে বিরম্বনায় পড়তে হয় আর আমাদের মতো যাদের নদীর ওপারে বাড়ি, তারা সবাই এ ভোগান্তির কথা মাথায় রেখেই ঢাকা থেকে রওনা হই। ঈদের মধ্যে এতটুকু ভোগান্তি না হলে ঈদের যে আনন্দটা তা আমরা কখনোই বুঝতে পারতাম না— এমনটাই বললেন চুয়াডাঙ্গাগামী যাত্রী ইকবাল আসিফ।
মঙ্গলবার (১১ মে) বিকেলে পাটুরিয়া ঘাটে অপেক্ষায় বসে ছিলেন পদ্মা নদী পাড়ি দিতে, একটি মাত্র লক্ষ্য, কখন নোঙর করবে ফেরি আর সেই ফেরিতে উঠে পার হয়ে যাবে দুই কিলোমিটার অদূরে দৌলতদিয়া ঘাটে।
মাদারীপুরগামী যাত্রী সুফিয়া বেগম (৫০) নামে এক নারী বলেন, বয়স হয়ে গেছে এখন আর কী আগের মতো শরীরে শক্তি সামর্থ্য আছে যে লাফিয়ে ফেরিতে উঠে নদী পার হবো। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে এসে ফেরিগুলো তীরে নোঙর করে গাড়িগুলো নামিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তীর থেকে একটু দূরে চলে যায়, আর এ সময় অনেকে জীবনে ঝুঁকি নিয়ে আবার লাফিয়ে ফেরিতে উঠে নদীপথ পার হচ্ছেন। এমনিতেই সারাটা রাস্তা নানা ধরনের কষ্ট করে ঘাট এলাকায় এসে পৌঁছেছি তাও দেখি এখানোও কোনো শান্তি নাই।
রফিকুল নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে সকালে রওনা হয়েছি পরিবারের তিন সদস্য নিয়ে। রাস্তায় ছয় জায়গায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছেন চালকরা। কিছু দূর হেঁটে এসে আবার ভ্যানে এসেছি এবং তারপর ছোট-ছোট মিনিবাসে করে শিবালয় এলাকায় আসার পর আর কোনো ভ্যান কিংবা গাড়ি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না প্রশাসন। তাই বাধ্য হয়েই স্ত্রী আর চার বছরের বাচ্চাকে নিয়ে হেঁটেই ঘাট এলাকায় এসে পৌঁছেছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থ্যা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, দিনের বেলায় পচনশীল পণ্য বোঝাই ট্রাক ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে ছোট ফেরিগুলো দিয়ে। জরুরি সেবার গাড়িগুলো ফেরিতে ওঠার আগেই ঈদের ঘরমুখো যাত্রীরা উঠে পড়ে যে কারণেই কিছু যাত্রীরা ওই সব গাড়ির সঙ্গে পার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত