বাউফল সরকারি কলেজে এইচএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ
ইমরান হোসেন,পটুয়াখালী থেকে: পটুয়াখালী বাউফল সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত অধিকাংশ শিক্ষার্থী গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। চলমান মহামারী পরিস্থিতি নিস্ব করে দিয়েছে অনেক পরিবারকে। ছাত্র-ছাত্রীদের ফরম পূরণের টাকা জোগাড় করতেই হিমসিম অবস্থা। তারপরে ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়, এ যেন মরার উপরে খারার ঘা।
তথ্যমতে, বিজ্ঞান বিভাগে ১১৬০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে ১০৭০ টাকা ফরম পূরণ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এবং ২০১৪ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া একটি পরিপত্রে দেখা যায় সরকারি কলেজ সমূহ উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স লেভেলের শিক্ষার্থীদের থেকে ৩০ টি খাতে অর্থ আদায় করতে পারবে, তবে সেই খাতগুলো পরিচালিত ও প্রযোজ্য হতে হবে৷ কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অধিকাংশ খাতে অর্থ আদায় করা যাবে না কারণ সেই খাতগুলো সচল নয়।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে বাউফল সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের একাধিক পরীক্ষার্থী জানায়, আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনেছি ফরম পূরণের ফি এর অতিরিক্ত কোন টাকা দিতে হবে না শিক্ষার্থীদের। কিন্তু আমাদের মেসেজের মাধ্যমে জানানো হয়েছে বিভাগভেদে ২১৭০ টাকা থেকে ২২৫০ টাকার মত দিতে হবে। যা অনেকের ক্ষেত্রে অসম্ভব বটে। যারা উপবৃত্তি পায় তাদের দিতে হবে ১৯৭০ টাকা। কি জন্য এই অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে সে ব্যাপারে নোটিশ বোর্ডে কোন নোটিশ দেয়া নেই। অন্যদিকে সাংবাদিকদের জানানোর কারণে এসাইনমেন্ট জমা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে কিছু শিক্ষক।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের অপর এক অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে সার্টিফিকেট নিতে দিতে হয়েছে ৫০-১০০ টাকা।
এ বিষয়ে বাউফল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ ইউসুফ রানা বলেন, আমি আজকে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জেনেছি অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। কালকে এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ স্যারের সাথে কথা বলবো। সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায় ও যে কোন সমস্যায় ছাত্রলীগ পাশে ছিলো, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
বাউফল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বসার তালুকদার বলেন, আমরা কখনো কোন শিক্ষার্থীর প্রতি অমানবিক হবো না। যাদের সমস্যা তাদের থেকে টাকা কমিয়ে নেয়া হবে।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা অতিরিক্ত অর্থ নিচ্ছি না বরং অনেক খাতের টাকা কমিয়ে দিয়েছি। ফরম পূরণের টাকার বাহিরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী অত্যাবশকীয় কর্মচারী ৪০০ টাকা (একাডেমিক কাউন্সিল নির্ধারিত), উন্নয়ন ফি ২০০ টাকা, বিবিধ ১০০ টাকা, মসজিদ ৫০ টাকা, ব্যবস্থাপনা ৫০ টাকা ও একবছরের বেতন ২৪০ টাকা নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, যদি অতিরিক্ত কোন অর্থ আদায় হয়, আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত