আমাদের আন্দোলন খালেদা-তারেকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য নয়: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করাতে আমরা বাধ্য হব। এক দফার আন্দোলনে। এক দফার আন্দোলনেই সুরাহা হবে। জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায় না। আমাদের আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী, খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর আন্দোলন নয়। আমাদের আন্দোলন জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার। আমাদের আন্দোলন রাষ্ট্রের গণতন্ত্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার। আমাদের আন্দোলন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার। আমাদের আন্দোলন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার।
সোমবার (২৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমাদের আগামী দিনে পথ চলতে হবে ডু অর ডাই গণতন্ত্রের মুক্তি চাই। গনতন্ত্র মুক্ত করবো। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। খালেদা জিয়ার মুক্তি হতে হলেতো গণতন্ত্রের মুক্তি হতে হবে। আর তার পূর্বের শর্ত হচ্ছে সরকারের পতন। আর কোন দাবির দরকার নেই।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকার নানা ভাবে ফাঁদে ফেলে ২০১৮ সালের মতো বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে নামানোর চেষ্টা করবে। এখন বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে তারা নির্বাচনে যাবেন কিনা। হাসিনাকে নির্বাচনে না নিয়ে নুরুল হুদাকে রেখে নির্বাচনে গেলে একটি ফেরেশতা এনেও যদি নির্বাচন করানো হয় তাহলেও সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবার কোন উপায় নেই।
এসময় গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি। জনগণের দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ। একটা পদত্যাগ করলে যদি সব সমস্যার সমাধান হয় তাহলে প্রতিটি সমস্যা নিয়ে আমরা কেন কথা বলবো। সেতো ইচ্ছে করে দিচ্ছে, খুকুমণি পরীমনি কয়েকদিন পরপর একেকটা আনতেছে। এটা বুঝেন না। এটা বুঝতে হবে না আমাদের, সুতরাং আমরা সব বুঝে গেছি।’
হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বজ পর্যন্ত হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট ব্যক্ষা দিতে পারবেন কোন আইনে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেননি? কোন আইনের বলে। স্বাধীনতার উত্তর কালে ফাঁসির আসামির জামিন হয়েছে। যাবত জীবন সাজার আসামীর তো প্রাই হয়। যেন-তেন আসামীর জামিন প্রাই হয়, খালেদা জিয়ার জামিন হয় না কেনো।
বিচারপতিদের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা বিভিন্ন সভা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আপনারা একটু ব্যাক্ষা করবেন খালেদা জিয়াকে কোন আইনের বলে জামিন দেন নাই। এটা জনগণ জানতে চায়। আদালত প্রশাসন সব শেখ হাসিনার আচলের গিট্টায় বাধা এই আচল কাটতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ঘরে বসে করোনায় না মরে রাজপথে গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়ে ইতিহাসের বুকে নিজের নামটা লিখে যাই। চাকরি করলে আরও ১২ বছর আগে বড় সচিব থেকে অবসরে যেতাম, ব্যবসা করলে ওই দরবেশের মতো আমরাও ব্যবসায়ী হতাম। আমরা আসছি জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য। কার কত টাকা হয়েছে এতে আমাদের কোন হিংসে নেই। সময় মতো হিসেব দিতে হবে টাকাটা কিভাবে হলো। কোন পথে হলো। বড়লোক হওয়াটা অপরাধ নয়, কারণ বড়লোক কি করে হলেন, এটাকি পকেট মেরে হইলেন, নাকি ছিনতাই করে হিলেন নাকি প্রতারণা করে হইলেন সেটা দেখার বিষয় রয়েছে।
তারেক রহমান দেশে আসবে, আর সেদিনতো বিমানবন্দরে মানুষের জায়গা হবে না, এটাতো বলার অপেক্ষা রাখে না। তারেক রহমানের নাম মাতৃ কোলে শিশুর কানে পৌঁছে দিচ্ছে আমরা যতটা না, তার থেকে বেশি সরকার। তারেক রহমানকে নিয়ে যতটা প্রচার তারা করছে, ততটা প্রচার আমরা করতে পারছেনা।
স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় এ-সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএস জিলানী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন প্রমুখ।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত