স্ত্রী তথ্য দিলে দল নিয়ে চুরি করতেন স্বামী

| আপডেট :  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৫৭  | প্রকাশিত :  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:৫৭

প্রথমে চট্টগ্রামে হাতেখড়ি। চুরিবিদ্যায় হাত পাকিয়ে বছর চারেক হলো মিশন চলছে ঢাকায়। তাও টার্গেট কেবল বহুতল ভবন। একাধিক দিন রেকি করে কৌশল ঠিক হলে তবেই মাঠে নামেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার করপোরেট অফিস ঘুরে খোঁজ খবর নিয়ে আসেন স্ত্রী মুক্তা আক্তার। তাঁর দেওয়া তথ্যে ওই অফিসে গিয়ে চুরি করেন স্বামী শফিক ভূঁইয়া ওরফে বাছা। গতকাল সোমবার রাজধানীর ডেমরা ও কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চোর চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. জামাল উদ্দিন, শফিক ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী মুক্তা আক্তার, জসিম উদ্দীন, কাদের কিবরিয়া ওরফে বাবু, মো. শাকিল এবং আলামিন। তাঁদের কাছ থেকে হাতুড়ি, লোহার রেঞ্জ, ব্লেড, প্লায়ার্স, স্ক্রু ড্রাইভার, ২০টি সিম কার্ডসহ চুরির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার চোর চক্রের সদস্যরা আদাবর টাওয়ারের চতুর্থ তলার এক্সপার্ট গ্রুপ, কাকরাইল নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১০ তলায় আমিন গ্রুপ, গুলশান জব্বার টাওয়ারের ১৯ তলায় এসিউর গ্রুপ, বাড্ডা রূপায়ন টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত সফটলিংক কোম্পানিতে ও সপ্তম তলায় অবস্থিত এক্সজিবল কোম্পানির অফিসে চুরি করার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। এসব চুরির বিষয়ে এত দিন কোনো সূত্র পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁদের গ্রেপ্তারের পর ঘটনাস্থলগুলোর সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় এসব চুরির সঙ্গে তাঁদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে ডিবি।

আজ মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, গত ১১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার প্যারাডাইস টাওয়ারের অষ্টম তলায় গোল্ডেন টাচ ইমপোর্টস আইএনসি অফিসে চুরির ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা হয়। ছায়াতদন্ত শুরু করে ডিবির উত্তরা বিভাগ। পরে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চুরির সঙ্গে জড়িত সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ চক্র চট্টগ্রামের বন্দরে বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দিয়েছে।

ডিবি জানায়, একসময় তারা চট্টগ্রাম শহরে চুরি করত। কয়েক বছর আগে তারা ঢাকায় চলে আসে। ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকার করপোরেট অফিসে চুরি করার টার্গেট করে চক্রের নারী সদস্য মুক্তা দু-তিন দিন ওই অফিস ও আশপাশের এলাকা ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতেন। সেখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন, কোন দিক দিয়ে ওই অফিসে ঢুকতে হবে, চুরির পর কীভাবে সেখান থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে হবে—এসব তথ্য তিনি স্বামী শফিককে জানাতেন। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ওই অফিসে চুরি করতেন এ চক্রের সদস্যরা। এ চক্র অফিসের দামি জিনিসপত্র ও টাকা চুরি করত।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে জামালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ১০টি ও ঢাকায় ৪টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া চক্রের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত