লক্ষ্মীপুরে নিজের সন্তানকে জবাই করে মায়ের আত্মহত্যা চেষ্টা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি, অহিদুর রহমান মানিক: লক্ষ্মীপুর সদরে নিজের ৪ বছর বয়সী শিশু সন্তানকে জবাই করে হত্যা করেছেন এক নারী। ঘাতক মায়ের নাম সাবিনা ইয়াসমিন (২৬)। জানা গেছে, সন্তানকে হত্যা করে নিজেই আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে জানাজানি হলে পুলিশের হাতে আটক হন ওই নারী।
রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের লাহারকান্দি গ্রামে একটি ভাড়া বাসায় নির্মম ওই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ২টার দিকে ঘাতক মা সাবিনাকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায় এবং শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সাবিনা সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী আজগর রহমানের স্ত্রী। শিশু আয়ানসহ যৌথ পরিবার নিয়ে তিনি লাহারকান্দি গ্রামে হাফিজ খাঁ’র বাড়িতে বাসা ভাড়া করে বসবাস করছিলেন।
সম্প্রতি তাদের সংসারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কেও কলহ শুরু হয়। রবিবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে সাবিনা ও তার স্বামীর ঝগড়া হয়। পরে প্রতিদিনের মতো আয়ানকে নিয়ে তিনি নিজকক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন৷ কিছুক্ষণ পরই ওই কক্ষ থেকে বিকট শব্দ ভেসে আসে। শব্দ শুনে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত দরজা ভেঙ্গে ভেতরে গিয়ে দেখে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে উড়না পেঁচিয়ে সাবিনা আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। শরীরে রক্ত মাখা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিক খাটের ওপর আয়ানের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পাশেই রক্তমাখা অবস্থায় ধারালো বটি পড়ে ছিল।
সাবিনার শ্বশুর হুমায়ুন কবির ও দেবর আবির জানান, সাবিনার স্বামী আজগর সৌদিতে রয়েছে। সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। ঝগড়ার কারণে সাবিনা অনেক বেশি রাগান্বিত ছিল। তারা তাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে প্রতিদিনের মতো নিজকক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষন পরে বিকট শব্দে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তারা এসব দেখতে পান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মহব্বত আলী জানান, সাবিনাসহ পরিবারের সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি। বাকবিতন্ডার মধ্যে আজগর তাকে ‘তালাক’ দিয়েছেন বলে তিনি (সাবিনা) জানিয়েছেন। বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে হত্যার পর তিনি নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দিন বলেন, হত্যার ঘটনায় গৃহবধূকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশুর দাদাসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি, নিহত শিশুটির মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত