চকরিয়ার এমপি জাফরসহ দুই নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

| আপডেট :  ১১ জুন ২০২১, ০১:৩৩  | প্রকাশিত :  ১১ জুন ২০২১, ০১:৩০

পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমসহ দুই নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে ও জাহেদুল ইসলাম লিটুকে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এছাড়া যুবলীগ নেতা হাসানুল ইসলাম আদরকে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা যুবলীগ।

নৌকা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীর ওপর হামলার দায়ে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় তাদের অব্যাহতি দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের দিন ছিল ২১জুন। কিন্তু করোনার মহামারি ফের বেড়ে যাওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন ১০জুন চকরিয়া পৌরসভাসহ সারাদেশে অধিকাংশ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে।

এর পূর্বে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৮জুন রাতে পৌরসভার চিংড়ি চত্বর এলাকায় চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের নেতৃত্বে দলীয় নৌকা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় নেতাকর্মীসহ সর্বত্র উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়লে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ৯জুন বিকালে গ্রামীণ ব্যাংক সেন্টারস্থ নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ৬জন দলীয় নৌকা প্রতীক প্রত্যাশীদের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। মনোনয়ন পেয়ে চকরিয়া আসার পর থেকে চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম ও তার অনুগত দলীয় অনুসারীরা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তার ভাতিজা জিয়াবুল হকের পক্ষে কাজ করেন এবং নৌকার পক্ষে কাজ করা নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন।

আলমগীর চৌধুরী আরো বলেন, তারই ধারাবাহিকতায় ৩নং ওয়ার্ডে নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ফেরার পথে পৌরসভার চিংড়ি চত্বরে এমপি জাফরের নেতৃত্বে জাহেদুল ইসলাম লিটু ও হাসানুল ইসলাম আদরসহ অস্ত্রধারী লোকজন নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালায়। হামলায় তিনি ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীসহ ৮/১০জন নেতাকর্মী আহত হন।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে পরিকল্পিত ঘটনাসহ নৌকার পরাজয় নিশ্চিত করতে বিরোধীতা করে আসছেন। সংবাদ সম্মেলন এবং জেলা আওয়ামী লীগের কাছে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১০জুন বিকালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি সভায় অব্যাহতি দেয়ার উক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে উক্ত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সরওয়ার আলমকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’র দায়িত্ব দেওয়া হয়।

চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ওই কমিটির সহসভাপতি অধ্যাপক মুসলেহ উদ্দিন মানিককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি’র দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও এমপির পিএস দাবিদার যুবলীগ নেতা হাসানুল ইসলাম আদরকে ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়কের পদসহ যুবলীগের সব পদ থেকে বহিস্কার করে বিবৃতি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী যুবলীগ।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

অপরদিকে, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ জাফর আলমকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে চকরিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পযর্ন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে তার অনুগত দলীয় নেতাকর্মীরা।

উপজেলার খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী ভেন্ডীবাজার, থানার রাস্তার মাথা, জিদ্দাবাজার ও হারবাংয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বেশ কিছু স্থানে ভাঙচুরও করেছে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত