১৩ বছর বয়সে আইপিএলে, ফাঁসতে পারে শিশুশ্রমের আইনে?
১৩ বছর বয়সে কোটিপতি! সম্ভব? হ্যাঁ, আইপিএলে সব সম্ভব। আর সম্ভব হবে নাই বা কেন, ‘মনোরঞ্জনের বাপ বলে কথা।’ নাচে, গানে, ক্রিকেটে তো বটেই, এমনকি নিলামেও এটাই এখন ভারতের প্রাইমটাইম ক্যাচার। এ বারের মতো নিলাম শেষ। শুরু থেকে শেষের পর্ব পর্যন্ত টানটান বিনোদন। জ়িরো থেকে হিরো— মরসুমের হাওয়া মোরগ ঘুরলে বদলে যায় কপাল। দুবাইয়ে যেমন এ বার দরই পেলেন না ‘আগামীর সচিন’। পৃথ্বী শ থেকে গেলেন অবিক্রীত। আবার এই নিলামেই নজরকাড়া হয়ে থাকল বৈভব সূর্যবংশী। নাবালক ব্যাটারের দাম উঠল ১ কোটি ১০ লক্ষ। কিনল রাজস্থান রয়্যালস।
সব ঠিকঠাক থাকলে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসাবে এই আইপিএলে রেকর্ড গড়তে চলেছেন বিহারের এই বিস্ময়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে বছর খানেক আগে। তখন বৈভব মাত্র ১২ বছর। পেশাদার ক্রিকেট লিগে নিলামের দিন বৈভবের বয়স ১৩ বছর ২৪৩ দিন। নাবালকের সাফল্যে খুশিতে একেবারে ডগমগ সমস্তিপুর।
ভারতীয় শ্রম আইনে অ্যাথলিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই শিক্ষা অধিকার আইন অনুযায়ী ১৪ বছর না হওয়া পর্যন্ত কোন শিশুই চাকরি করতে পারবে না, স্কুল শেষ হওয়ার পরেই কোন পেশায় নিযুক্ত হওয়ার অধিকার আছে তবে সেখানে শর্ত রয়েছে জীবনরোধ শৃঙ্খলা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মানসিকভাবে তৈরি হতে পারে এমন কিছু বিষয়ে শিশুদের যোগদানের কোন বাধা নেই ভারতীয় শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে কোন শিশু কোন রকম বিপদজনক পেশায় কাজ করতে পারবে না। তাহলে কি বৈভবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এইসব আইন? উত্তর হলো না ভারতে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুকে শ্রমে নিয়োগ করা অপরাধ কিন্তু খেলার ক্ষেত্রে তা কার্যকর নয় খেলোয়াড় নিজে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের একাধিক প্রতিযোগিতা অংশগ্রহণ করে থাকলে তো এসবের প্রশ্নই নেই। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বৈভাবকে পেরোতে হবে ১৫ বছরের মাইলস্টোন। তবে বিষেশ কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে আবেদন করে ছাড়পত্র আদায় করা যেতে পারে প্রতিভার।
রাজস্থান রয়্যালসে দাদা হিসাবে বৈভব পাবে সঞ্জু স্যামসন, যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেলের মতো সিনিয়রদের। সুযোগ থাকবে জোফ্রা আর্চার, সিমরন হেটমায়ারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার। ১৩ বছরের বাঁ হাতি স্যর হিসাবে পাবে রাহুল দ্রাবিড়কে।
প্রতিভার বিরাট মূল্য খুশি এনে দিয়েছে সমস্তিপুরের কৃষক পরিবারে। ছেলের স্বপ্নের জন্য বাড়িঘর, জমিজমা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। কাজের জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে যেতে হয়েছে মুম্বইয়ে। কাজ করতে হয়েছে নাইটক্লাবের বাউন্সার হিসাবেও। সে ঘরে এ বার লক্ষ্মী এসেছে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত