লকডাউনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুর ও সংঘর্ষে
দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। গেলো কয়েকদিন ধরেই প্রতিদিন শতাধিক মৃত্যুর হয়েছে। এমন অবস্থাই আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন চলছে। এদিকে লকডাউনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের আহত হয়েছেন কমপক্ষে পাঁচজন।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকালে বগুড়ার ধুনট উপজেলার সোনাহাটা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, করোনা সংক্রমণরোধে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে সাতদিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ধুনটের সোনাহাটা বাজার এলাকায় লকডাউন চলতে থাকে। এসময় জিনিয়াস মর্ডান মাদরাসা নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। এতে আশিকুর রহমান মানিক নামে এক ব্যবসায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার প্রতিবাদ করেন। এ বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা পরিচালনাকারী মহসীন আলম ও গোলাম মোস্তফার সঙ্গে আশিকুর রহমান মানিকের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টিপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে সোনাহাটা বাজারের মন্ডল স্টোরের মালিক আশিকুর রহমান (৩৫), মহসীন আলম (৪২) ও গোলাম মোস্তফাসহ পাঁচজন আহত হন। হামলাকারীরা মন্ডল স্টোর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ভাঙচুর করেছে। আহতরা ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে।
আশিকুর রহমান মানিক বলেন, লকডাউন অমান্য করে মাদরাসা খোলা রেখে সেখানে পাঠাদান করানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় মাদরাসা পরিচালনাকারীরা আমাকে পিটিয়ে আহত করেছে এবং আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে মহসীন আলম বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান মানিক ও তার লোকজন আমাকে মারধর করেছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বগুড়ায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত আরো ৫ ব্যক্তি মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সবাই বগুড়া জেলার। এছাড়া নতুন করে আরো ১৩৪জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময় সুস্থ হয়েছেন ৮৩জন। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বেলা ১১টায় বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন এসব তথ্য জানান।
২৪ ঘন্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, বগুড়া সদরের আব্দুল জলিল (৭০), রমজান আলী (৫৫) ও আকরামুল হক (৬২), শাজাহানপুর উপজেলার মোঃ মান্নান(৬০) এবং ধুনটের ইদ্রিস আলী (৫৩)।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৩৫২ নমুনার মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ২৩৩টি নমুনায় ৮২জনের, জিন এক্সপার্ট মেশিনে ১৫ নমুনায় ১০জনের, এন্টিজেন পরীক্ষায় ৭৯নমুনায় ৩০জনের এবং টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ২৫ নমুনায় ১২জন করোনায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ৩৮ দশমিক ০৬শতাংশ। নতুন আক্রান্ত ১৩৪জনের মধ্যে সদরের ৯৩জন, শাজাহানপুরে ১০জন, ধুনটে ৬জন, দুপচাঁচিয়ায় ৫জন, শেরপুরে ৫জন, শিবগঞ্জে ৪জন, আদমদীঘিতে ৪জন, গাবতলীতে ২জন, কাহালুতে ২জন এবং সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও নন্দীগ্রাম একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন আরও জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৭৩জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৬৯৫ জন। মোট মৃত্যু ৩৯৯জন এবং বর্তমান চিকিৎসাধীন ৮৭৯ জন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত