প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন

দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের করা আবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর আগে এ আবেদনের ফাইলটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। খালেদা জিয়ার সাজার স্থগিতাদেশের মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে।
আবেদনটি প্রাধামন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর বিষয়টি বুধবার নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র। গত মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে পরিবারের করা আবেদন মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে কী মতামত দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি। মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে করা আবেদনের বিষয়ে দুপুরে হাইকোর্টে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, মামলা বিচারাধীন থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্থায়ী মুক্তি দেওয়ার সুযোগ সরকারের নেই। তিনি জানান, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, সরকার চাইলেই খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিন দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোনো আইনি জটিলতা নেই।
গত ১৫ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ তৃতীয় দফায় ছয় মাস বৃদ্ধি করে সরকার। ওই মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষের ক’দিন আগেই আবেদন করে তার পরিবার।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর গুলশানের বাড়িতে ওঠেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে গত এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছু দিন হাসপাতালে চিকিৎসাও নেন তিনি। ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে বিএনপি বরাবরই দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগেও পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল, গত ৯ মে তা নাকচ করে দেয় সরকার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ের পর খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দীন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত