বাড়িতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন মেয়ে
এসএসসির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সিনথিয়া কবির। সকালে সহপাঠীদের মতো বাবাকে নিয়ে আনন্দের সাথে এসএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষায় যাওয়ার কথা। কিন্তু সেই আনন্দই পরিণত হলো বিষাদে। হঠাৎ বাবার মৃত্যুর কারণে লাশ বাড়িতে রেখে একাই পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হলো তার। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কুটিপাড়া গ্রামে।
সিনথিয়া কবির ঘোড়াশাল পৌর এলাকার জনতা আদর্শ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী। তিনি কুটির পাড়া গ্রামের হুমায়ুন কবিরের মেয়ে। তার বাবা জনতা জুটমিলে কোয়ালিটি অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। শনিবার রাতে হঠাৎ তার বাবা হুমায়ুন কবির অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরে রোববার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
সিনথিয়ার স্বজনরা জানান, হুমায়ুন কবিরের দুই মেয়ের মধ্যে সিনথিয়া সবার বড়। বাবাকে হারিয়ে অনেকটা নির্বাক হয়েও সহপাঠী ও কেন্দ্র সচিবের সহযোগিতায় ঘোড়াশাল ডা: নজরুল বিন নূর মহসিন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে সিনথিয়া প্রথম দিনের পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশ নেন। সিনথিয়া কবিরের বাবার মৃত্যুর খবরে স্বজনের মধ্যে যেমন শোকের ছায়া নেমে আসে, তেমনি সিনথিয়ার সহপাঠী ও শিক্ষকদের মধ্যেও দেখা দেয় শোকের ছায়া। পরীক্ষা থেকে সহপাঠীরাও সমবেদনা জানাতে ছুটে আসে সিনথিয়ার বাড়িতে।
ডা: নূর মহসিন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজর অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব রিনা নাসরিন জানান, পরীক্ষার্থী সিনথিয়া কবিরের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা অবগত আছি। তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না। সে সবার সাথে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিচ্ছে। আমরা মনে করি, বিশেষ কোনো ব্যবস্থা ছাড়া সবার সাথে পরীক্ষা দিলে তার জন্য ভালো হবে। আমরাও তাকে সান্ত্বনা ও উৎসাহ দিয়েছি পরীক্ষা দিতে এবং তার দিকে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হয়েছে।
জনতা আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মাসুদ খান বলেন, সিনথিয়ার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে তাদের বাড়িতে গিয়ে সিনথিয়াকে সাহস দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে পাঠাই। সে ভালো পরীক্ষা দিয়েছে। আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাকে সবধরণের সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। পাশাপাশি তার বাবার কর্মস্থান থেকেও যেন শোকাহত পরিবারটি সহযোগিতা পায় সেই চেষ্টা করবো।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত