যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তাদের মনের পাকিস্তান রয়েছে: শিক্ষামন্ত্রী
বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পুরো বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। অন্যদিকে, কিছু হত্যাকারী, সন্ত্রাসী ও দূর্বৃত্ত রয়েছে যারা রাজনীতি না করে অপরাজনীতি করে, ইতিহাস বিকৃতি করে। যারা এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তাদের মনের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। অপশক্তির সকল অপচেষ্ঠা আমাদের রুখে দিতে হবে। রুখে দেয়ার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস আমাদের মাধ্যে সঞ্চারিত হবে। বাংলাদেশের আজকের যে অর্জন তা বিশ্ববাসী অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেছে। লাল সবুজের মর্যাদা আজ বিশ্বব্যাপী।
আজ মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৫ টায় গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে সুইমিংপুল ও জিমনেসিয়ামে আয়োজিত আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেছেন,বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে বাংলাদেশকে জানার জন্যে, আমাদের নিজেদের ইতিহাসকে ও আমাদের সংগ্রামের অর্জনের ইতিহাসকে জানার জন্যে। তাই বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে লেখা তিনটি বই “অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন” আমাদের বই পড়া কর্মসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এসব বইয়ের মধ্য থেকে কিছু অংশ আমরা পাঠ্য পুস্তকেও অন্তর্ভূক্ত করেছি। একই ভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও বঙ্গমাতার জীবন আমরা পাঠ্যসূচির অন্তর্ভূক্ত করেছি। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় ও কারিগারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই বইগুলোর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা শুরু হয়েছে। যাতে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে।
দীপু মনি আরো বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে সব সময় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা এ পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে পারবো। আমরা অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক ভাল অবস্থানে আছি। আগামিতেও আমরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো, তাহলে খুব বেশি আশংকার কিছু থাকবে না। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যে কোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, খুনি মোস্তাকের হাত ধরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ এর ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলো। সেই ভাষণ ইউনেস্কোর “মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার” এ অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে “বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্যের” স্বীকৃতি লাভ করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছিলো। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করে যুদ্ধাপরাধীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলো। সেই অপরাধীরা ৭১, ৭৫, ২০০৪, ২০১৩ ও ২০১৪ তে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আবার বাংলাদেশকে ফিরেয়ে এনেছেন। ইতিহাসের সত্যকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ক অগ্রযাত্রা তা শেখ হাসিনার হাত ধরেই এসেছে। অনেক শক্তিশালী দেশের রক্তচক্ষু উপক্ষো করে বিদেশী সাহায্য ছাড়া তৈরী হয়েছে পদমা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল। তাই সব বাঁধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে ডা: দীপু মনি আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধা ও আগত অতিথিদের শপথ বাক্যপাঠ করান। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত ও পরে থিম সং পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, মুক্তিযোদ্ধা সিকদার নুর মোহাম্মদ দুলু, মো: ফিরোজ খান ও বদরুদ্দোজা বদর বক্তব্য রাখেন। পরে সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জেলার বীর মুক্তিযুদ্ধা অংশ নেন।
এর আগে মন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহাপাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও সরকারি উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত